ব্যবসায়ী: অর্থনীতির চালিকাশক্তি
মানব সভ্যতার শুরু থেকেই ব্যবসায়ের অস্তিত্ব বিদ্যমান। প্রাথমিক বিনিময় ব্যবস্থা থেকে শুরু করে আধুনিক পুঁজিবাদী অর্থনীতি পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে। একজন ব্যবসায়ী হলেন এমন ব্যক্তি যিনি ব্যবসায়িক উদ্যোগের মাধ্যমে লাভ অর্জন করেন এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখেন। তিনি মালিক, প্রতিষ্ঠাতা, শেয়ারহোল্ডার, বিনিয়োগকারী বা ব্যবস্থাপকের ভূমিকায় থাকতে পারেন।
ইতিহাসের পাতায়: মধ্যযুগীয় ইতালির বণিকশ্রেণী থেকে শুরু করে, ষোড়শ শতাব্দীতে ইউরোপের বৈশ্বিক বাণিজ্যিক আধিপত্যের সময়কালে ব্যবসায়ীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ১৩০০ থেকে ১৫০০ সালের মধ্যে আধুনিক হিসাববিজ্ঞান, বিল অব এক্সচেঞ্জ এবং সীমিত দায়বদ্ধতার উদ্ভাবন ব্যাংকিং ব্যবস্থার উত্থান ঘটায় এবং এই সময়
প্রথম সত্যিকারের ব্যাংকার
উদ্ভব হয়। ইউরোপে
ধনী বণিকদের উত্থান
এবং
বণিক শ্রেণীর উত্থান
ঘটে, যারা মধ্যস্থতাকারী
বুর্জোয়া
হিসেবে কাজ করত।
শিল্প বিপ্লবের সময়: ষোড়শ শতাব্দীর পর থেকেই ইউরোপে কাগজের অর্থ, চেক এবং যৌথ মূলধন ব্যবসা ব্যবসায়ীদের কাজে লাগে। এই সময়কালে বীমা ব্যবসাও বিকশিত হয়। এইসব নতুন সরঞ্জাম
পুঁজিবাদী শ্রেণী
এর উত্থান ঘটায়। এই বিনিয়োগকারীরা ব্যবসায় মালিক হিসেবে বিনিয়োগ করতেন, কিন্তু তারা পণ্য বণিক ছিলেন না। তারাই শিল্প বিপ্লবের প্রধান শক্তি ছিল। ১৭৯৮ সালে
বিজনেস-মেন
এবং ১৮০৩ সালে
বিজনেস-ম্যান
শব্দটি প্রথম ব্যবহার করা হয়।
আধুনিক ব্যবস্থাপনা: শিল্পপতিদের অধীনে কাজ করা নতুন ধরনের কর্পোরেট কার্যনির্বাহী হলেন ম্যানেজার বা ব্যবস্থাপক। রবার্ট ওয়েন (১৭৭১-১৮৫৮) ব্যবস্থাপনা পেশার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ব্যবস্থাপনা জনপ্রিয়তা অর্জন করে, যেমন হার্বার্ট হুভার এবং হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল উল্লেখযোগ্য।
উপসংহার: ব্যবসায়ীরা অর্থনীতির প্রাণশক্তি। তাদের উদ্যমী মনোভাব, নতুনত্ব এবং অর্থনৈতিক অবদান সভ্যতার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।