বৈরুত: লেবাননের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর
বৈরুত (আরবি: بيروت, প্রতিবর্ণীকৃত: Bayrūt; ফরাসি: Beyrouth) লেবাননের রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর। ২০০৭ সালের হিসাবে এর জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২১ লক্ষ। ভূমধ্যসাগরের উপকূলে অবস্থিত এই শহরটি দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর এবং বাণিজ্য কেন্দ্র। বৈরুতের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে, এটি স্থানীয় ড্রুজ ইমির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। ১৭৬৩ সালে অটোমানরা এটি পুনরায় দখল করে। মিশরের ইব্রাহিম পাশার একর দখলের পর ১৮৩২ সালে বৈরুত পুনরুজ্জীবন লাভ করে।
ভৌগোলিক অবস্থান:
বৈরুত ভূমধ্যসাগরের তীরে একটি উপদ্বীপে অবস্থিত। লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত থেকে এটি প্রায় ৯৪ কিমি (৫৮ মাইল) উত্তরে অবস্থিত। পাহাড়ঘেরা এই শহরটির আকৃতি ত্রিকোণাকার। আল-আশরাফি এবং এবন আল-মুসাইতিবাহ এর দুটি উল্লেখযোগ্য পাহাড়। বৈরুত গভর্নরেটের আয়তন ১৮ বর্গ কিলোমিটার (৬.৯ বর্গ মাইল) এবং মেট্রোপলিটান এলাকার আয়তন ৬৭ বর্গ কিলোমিটার (২৬ বর্গ মাইল)।
জলবায়ু ও জনসংখ্যা:
বৈরুতে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু বিরাজ করে। গ্রীষ্মকাল শুষ্ক ও উষ্ণ, বসন্ত ও শরৎ আরামদায়ক এবং শীতকালে ঠান্ডা এবং বৃষ্টিপাত হয়। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৮৬০ মিলিমিটার। ১৯৩২ সালের পর লেবাননে কোনো জনসংখ্যা গণনা হয়নি, তবে বৈরুতের জনসংখ্যা ৯৩৮,৯৪০ থেকে ১,৩০৩,১২৯ এর মধ্যে এবং বৃহত্তর বৈরুতের জনসংখ্যা প্রায় ২,২০০,০০০ বলে অনুমান করা হয়।
ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য:
বৈরুত লেবানন এবং মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ধর্মীয়ভাবে বৈচিত্র্যময় শহর। এখানে মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পাশাপাশি ১৮টি স্বীকৃত ধর্মীয় গোষ্ঠী বসবাস করে। বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ ও উত্তরাধিকারের মতো পারিবারিক বিষয়গুলি এখনও ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা পরিচালিত হয়।
শিক্ষা:
লেবাননে উচ্চশিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং কারিগরি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। আমেরিকান বৈরুত বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি সেন্ট-জোসেফ (USJ) দেশের যথাক্রমে প্রাচীনতম ইংরেজি ও ফরাসি মাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয়। লেবানন বিশ্ববিদ্যালয় বৈরুতের উচ্চ শিক্ষার একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান।