বীর উত্তম বেলায়েত হোসেন: স্বাধীনতা যুদ্ধের এক অমর যোদ্ধা
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বেলায়েত হোসেনের অবদান অবিস্মরণীয়। চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার গাছুয়া গ্রামের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা তার সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে অমরত্ব অর্জন করেছেন। বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে তাঁর বীরত্বকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে।
বেলায়েত হোসেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি বিদ্রোহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগ দেন। মার্চ মাসের শুরু থেকে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থান করেন এবং ২ নম্বর সেক্টরের সালদা নদী সাব-সেক্টরে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালের ১৪ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার সালদা নদী এলাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তিনি তীব্র যুদ্ধে লিপ্ত হন। তার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাদের প্রতিরক্ষা অবস্থানে আক্রমণ চালায় এবং তাদেরকে পিছু হটতে বাধ্য করে। এই যুদ্ধে তিনি অসাধারণ বীরত্ব প্রদর্শন করেন। দুর্ভাগ্যক্রমে, শত্রুদের গুলিতে আহত হয়ে ১৪ নভেম্বর তিনি শহীদ হন।
গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় বেলায়েত হোসেনকে কুল্লাপাথর গ্রামের এক টিলায় অন্যান্য শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সমাহিত করা হয়। এই সমাধিস্থল বর্তমানে কুল্লাপাথর শহীদ স্মৃতিসৌধ হিসেবে পরিচিত। বেলায়েত হোসেনের স্মৃতি আজও বাঙালি জাতির কাছে অনুপ্রেরণার উৎস। তার বীরত্ব ও আত্মত্যাগের কথা সর্বদাই স্মরণীয় থাকবে।