বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর: উত্তরবঙ্গের জ্ঞানের আলো
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর (সংক্ষেপে: বেরোবি) বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের রংপুর শহরে অবস্থিত একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে যাত্রা শুরু করে, পরবর্তীতে ২০১১ সালে বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার নামানুসারে বর্তমান নামকরণ করা হয়।
প্রতিষ্ঠা ও প্রাথমিক বছর: রংপুরে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ২০০৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। প্রথমে রংপুর সদরের ধাপ এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ৩০০ জন ছাত্রছাত্রী ও ১২ জন শিক্ষক নিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর ক্যাডেট কলেজ ও কারমাইকেল কলেজের নিকটবর্তী ৭৫ একর জমির উপর স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম স্থানান্তরিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমান প্রথম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বর্তমান অবস্থা: বর্তমানে বেরোবি ৬টি অনুষদের অধীনে ২২টি বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে প্রায় ৮৫০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। ক্যাম্পাসে আছে আধুনিক একাডেমিক ভবন, তিনটি ছাত্রাবাস, একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরী, মেডিকেল সেন্টার, এবং ৩০০ প্রজাতির ৩৬ হাজার গাছপালা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ও তথ্য কেন্দ্র (CLIC) শিক্ষাদান ও গবেষণার জন্য বিপুল সংস্থান যোগায়। 'ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউট' গবেষণা কার্যক্রমে অবদান রাখার লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখনও পূর্ণমাত্রায় কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।
সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্য অর্জন করছে। তবে আবাসিক হলের সংকট, শ্রেণিকক্ষের অভাব এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতের অসমতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিদ্যমান। সেশনজট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুততম প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে।
গুরুত্ব: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় উত্তরবঙ্গের উচ্চশিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এটি শুধুমাত্র শিক্ষা প্রদানই নয়, গবেষণা ও জনসাধারণের সাথে সম্পৃক্ততার মাধ্যমে অঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।