বেইজিং

বেইজিং: চীনের উত্তরের রাজধানী ও বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মহানগরী

বেইজিং, পূর্বে পেইচিং নামে পরিচিত, চীনের রাজধানী এবং দেশটির রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। উত্তর চীন সমভূমির উত্তর প্রান্তে, ইয়ানশান ও সিশান পর্বতমালায় ঘেরা এই মহানগরী প্রায় ১৬,৪১১ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। হাই নদী ব্যবস্থার উপনদীগুলি বেইজিংয়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

জনসংখ্যার দিক থেকে বেইজিং বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল জাতীয় রাজধানী, যার ২০১৭ সালে জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২ কোটি ১৭ লক্ষ। মূল নগরীর আয়তন ৪৫৬৭ বর্গকিলোমিটার। শহরের প্রায় ৯৫% লোক হান চীনা জাতিভুক্ত। বেইজিংয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী সনাতন চীনা ধর্মে বিশ্বাসী।

অর্থনীতিতে বেইজিং চীনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর (সাংহাই ও হংকংয়ের পরে)। বস্ত্র, মোটরগাড়ি, ইলেকট্রনিকস, কম্পিউটার ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশের কারখানা বেইজিংয়ে অবস্থিত। পর্যটন খাত বেইজিংয়ের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১৫ সালে ফর্চুন গ্লোবাল ৫০০ তালিকার ৫২টি বহুজাতিক কোম্পানীর সদর দফতর ছিল বেইজিংয়ে।

শিক্ষার ক্ষেত্রে বেইজিংয়ে ৯১টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যার মধ্যে বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয় ও ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। সাক্ষরতার হার ৯৮% এর বেশি।

ঐতিহাসিক দিক থেকে, বেইজিং চীনের চার মহান প্রাচীন রাজধানীর শেষটি। চিন, ইউয়ান, মিং এবং ছিং রাজবংশের রাজধানী হিসেবে বেইজিংয়ের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। নিষিদ্ধ শহর (ফরবিডেন সিটি), স্বর্গীয় মন্দির (টেম্পল অফ হেভেন), গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ (সামার প্যালেস) এবং চীনের মহাপ্রাচীর (গ্রেট ওয়াল অফ চায়না)- এর মতো ঐতিহাসিক স্থাপনার জন্য বেইজিং বিখ্যাত। ২০০৮ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক এবং ২০২২ সালে শীতকালীন অলিম্পিকের আয়োজনের জন্য বেইজিং বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করে।

বেইজিংয়ের জলবায়ু আর্দ্র মহাদেশীয় ধরণের, গ্রীষ্মে উষ্ণ ও আর্দ্র এবং শীতকালে ঠান্ডা ও শুষ্ক। বেইজিংয়ের পরিবহন ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত, রেল, বিমানবন্দর এবং পাতাল রেলের নেটওয়ার্ক বিশ্বের অন্যতম সেরা।

মূল তথ্যাবলী:

  • বেইজিং চীনের রাজধানী ও প্রশাসনিক কেন্দ্র
  • বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল জাতীয় রাজধানী
  • রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু
  • ঐতিহাসিক স্থাপনা ও অলিম্পিক আয়োজনের জন্য বিখ্যাত
  • উন্নত অর্থনীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা