বুলাওয়ে

বুলাওয়ে (Bulawayo): জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর

জিম্বাবুয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত বুলাওয়ে দেশটির মাতাবেলেল্যান্ড অঞ্চলের বৃহত্তম শহর। ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এর জনসংখ্যা ৬,৬৫,৯৪০, যদিও শহর পরিষদ প্রায় ১.২ মিলিয়ন বলে দাবি করে। মাতশেউম্লোপ নদীর তীরে অবস্থিত এই শহরটি প্রায় ৫৪৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। হারারের সাথে, বুলাওয়েও জিম্বাবুয়ের একমাত্র দুটি শহর যা একই সাথে একটি প্রদেশও।

ঐতিহাসিক পটভূমি:

বুলাওয়ের ইতিহাস ১৮৪০ সালের দিকে শুরু হয়। এনদিওয়েনির নেতৃত্বে একটি গোষ্ঠী এখানে বসতি স্থাপন করে। এনদেবেলে রাজা মিজিলিকাজির ক্রাল হিসেবে পরিচিত এই স্থানটি পরবর্তীতে রাজা লোবেঙ্গুলার অধীনে কোবুলাওয়েও নামে পরিচিত হয়। লোবেঙ্গুলা ১৮৯৩ সাল পর্যন্ত এখান থেকে শাসন করেন, যতক্ষণ না প্রথম মাতাবেলে যুদ্ধে ব্রিটিশ দক্ষিণ আফ্রিকা কোম্পানি (বিএসএসি) এটি দখল করে। দ্বিতীয় মাতাবেলে যুদ্ধে এনদেবেলে যোদ্ধারা শহরটি অবরোধ করেছিল। বুলাওয়ে ১৮৯৭ সালে পৌরসভার এবং ১৯৪৩ সালে শহরের মর্যাদা পায়।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব:

ঐতিহাসিকভাবে বুলাওয়ে জিম্বাবুয়ের প্রধান শিল্প কেন্দ্র। এখানকার কারখানাগুলো গাড়ি, নির্মাণ সামগ্রী, ইলেকট্রনিক পণ্য, টেক্সটাইল, আসবাবপত্র এবং খাদ্য পণ্য উৎপাদন করে। জিম্বাবুয়ের রেল নেটওার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দুও এটি। তবে, সম্প্রতি অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শিল্পায়ন কমে গেছে।

শিক্ষা ও সংস্কৃতি:

বুলাওয়েতে এক ডজনেরও বেশি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, বুলাওয়ে পলিটেকনিক কলেজ, জিম্বাবুয়ে স্কুল অফ মাইনস উল্লেখযোগ্য। জিম্বাবুয়ের প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘরও এখানেই অবস্থিত। মাতোবো ন্যাশনাল পার্ক এবং খামি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এর নিকটবর্তী।

বুলাওয়ের নামের উৎপত্তি:

"বুলাওয়ে" নামটি এনদেবেলে শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ "যাকে হত্যা করা হবে"। ধারণা করা হয়, শহরের গঠনের সময় গৃহযুদ্ধ হয়েছিল।

সাম্প্রতিক সময়:

২০ শতকের শেষের দিক থেকে বুলাওয়ে জীবনযাত্রার মান হ্রাস পেয়েছে। বিনিয়োগের ঘাটতি, অবকাঠামোর অবনতি, দুর্নীতি এর মূল কারণ। অনেক শিক্ষিত শ্রমিক দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় চলে গেছে।

বুলাওয়ে আজ:

বুলাওয়ে এখনও জিম্বাবুয়ের ভারী শিল্প ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতার একটি বড় অংশ ধারণ করে। নতুন বিনিয়োগ এবং উন্নয়নের আশায় শহরটি নতুন করে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর
  • মাতাবেলেল্যান্ড অঞ্চলের বৃহত্তম শহর
  • ঐতিহাসিকভাবে জিম্বাবুয়ের প্রধান শিল্প কেন্দ্র
  • প্রচুর কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে
  • মাতোবো ন্যাশনাল পার্কের নিকটবর্তী