বিতর্ক: একটি বিস্তারিত আলোচনা
বিতর্ক, জনমতের দ্বন্দ্ব বা মতবিরোধের একটি দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা, বিরোধপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামতের উপর ভিত্তি করে। ল্যাটিন "controversia" থেকে উদ্ভূত এই শব্দটির অর্থ "বিরোধ"। আইনি দিক থেকে, বিতর্ক আইনি মামলা থেকে পৃথক; আইনি মামলা ফৌজদারি ও দেওয়ানি উভয়কেই নির্দেশ করে, তবে বিতর্ক সাধারণত দেওয়ানি বিরোধকে নির্দেশ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের "মামলা বা বিতর্ক" ধারা বলে যে, ফেডারেল আদালতগুলো শুধুমাত্র বাস্তব ও সমাধানযোগ্য বিরোধের ক্ষেত্রে শুনানি করতে পারে।
বেনফোর্ডের বিতর্কের আইন (১৯৮০) বলে যে কোন বিষয়ে আবেগের পরিমাণ প্রকৃত তথ্যের পরিমাণের বিপরীতভাবে সমানুপাতিক। তথ্যের অভাব বিতর্ক বাড়ায়। পদার্থবিদ্যার বিতর্কগুলো প্রায়শই পরীক্ষার অসম্ভবতার কারণে সীমাবদ্ধ থাকে, তবে রাজনীতিতে তথ্যের অভাব বিতর্ককে ব্যাপক করে তোলে।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিতর্ক তীব্র। একটি সমীক্ষা (১৫৪০ জন প্রাপ্তবয়স্ক) দেখায়, বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা বিতর্কের তীব্রতার সাথে সম্পর্কিত, তবে তথ্য বিতর্কের পক্ষ পরিবর্তন করে না। ড্যানিয়েল কাহনেমানের "সীমিত যুক্তি" তত্ত্ব বলে, সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়া হয়, যা জটিল বিষয়ে যেমন জলবায়ু পরিবর্তন, উপযুক্ত নয়। অ্যাঙ্করিং, পূর্বের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত গ্রহণকে প্রভাবিত করে।
এইচপিভি ভ্যাকসিনের বিতর্ক দেখায়, একই প্রমাণ ভিন্ন উপসংহারে নিয়ে যেতে পারে। কাহনেমানের তত্ত্ব অনুসারে, মানুষ নিজেদের পূর্ব বিশ্বাসের সাথে মিল রেখে প্রমাণ ব্যাখ্যা করে। বন্দুক নিয়ন্ত্রণ বিতর্কও এই তত্ত্বকে সমর্থন করে। সাংস্কৃতিক সম্প্রদায়ের মডেল বলে, বিশ্বাসগুলো বিচ্ছিন্ন উপ-গোষ্ঠীতে মেরুকরণের দিকে ঠেলে দেয়। বায়েসিয়ান সিদ্ধান্ত তত্ত্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিসংখ্যানগতভাবে অপ্টিমাইজ করা পদ্ধতি ব্যাখ্যা করে। ব্রোকাস ও ক্যারিলোর মডেল বলে, একক-ধাপে সিদ্ধান্ত নেওয়া বিশ্বাসের নোঙ্গর এবং মতামতের মেরুকরণ তৈরি করে।
ইলবার্ট বিল (১৮৮৩): ব্রিটিশ ভারতে ইউরোপীয় ও ভারতীয় বিচারকদের বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে বিতর্ক। বর্ণবাদী ইউরোপীয়দের প্রতিরোধের পর বিল সংশোধিত হয়। এটি ভারতীয়দের অধিকার আন্দোলন ত্বরান্বিত করে। ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ও ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের উত্থানে ভূমিকা পালন করে।