বাবুগঞ্জ উপজেলা বরিশাল জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা। এর উত্তরে গৌরনদী, দক্ষিণে বরিশাল সদর ও ঝালকাঠি সদর, পূর্বে মুলাদী ও বরিশাল সদর এবং পশ্চিমে উজিরপুর উপজেলা অবস্থিত। বাবুগঞ্জের আয়তন ১৬৪.৮৮ বর্গ কিমি। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, এখানকার জনসংখ্যা ছিল ১,৪০,৩৬১ জন; পুরুষ ৬৭,৫৮৬ জন এবং মহিলা ৭২,৭৭৫ জন। ৯৩.৮৫% মুসলিম, ৬.১২% হিন্দু এবং অতি সামান্য সংখ্যক অন্যান্য ধর্মাবলম্বী এখানে বসবাস করেন। সাক্ষরতার হার ৬৮.৮%।
বাবুগঞ্জের নামকরণের সঠিক ইতিহাস জানা না গেলেও, ঐতিহাসিক বর্ণনা থেকে জানা যায় যে ৪০০ বছর আগে এই অঞ্চলে বসবাসকারী হিন্দু জমিদারদের ‘বাবু’ বলে ডাকা হতো এবং তাদের মেলাস্থলকে ‘গঞ্জ’ বলা হতো। ‘বাবুদের গঞ্জ’ থেকেই এই এলাকার নাম ‘বাবুগঞ্জ’ হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। আরেকটি তথ্য অনুসারে, যশোর পরগনার জমিদার ‘বাবু বিরাজ রায় চৌধুরী’ এই অঞ্চলে একটি বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপন করেন, যার নামানুসারেই এই এলাকার নামকরণ হয়।
বাবুগঞ্জ উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন রয়েছে। ৩টি ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম বাবুগঞ্জ থানার অধীনে এবং বাকি ৩টি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বিমানবন্দর থানার অধীনে পরিচালিত হয়। বাবুগঞ্জ থানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯০৬ সালে, এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তরিত করা হয় ১৯৮৩ সালে।
অর্থনীতিতে কৃষি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কৃষিজমি মালিকানা ভুমিমালিক ৭৭.৯৯% এবং ভূমিহীন ২২.০১%। এছাড়াও ব্যবসা, চাকরি, পরিবহন ও যোগাযোগ, নির্মাণ কাজ, এবং অন্যান্য উৎস থেকেও উপজেলার অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়। উল্লেখযোগ্য শিল্প ও কলকারখানার মধ্যে আছে তেল মিল, আটাচালনা, চাউল কল, আইস ফ্যাক্টরি এবং ওয়েল্ডিং কারখানা। কুটিরশিল্পের মধ্যে আছে লৌহশিল্প, কাঠের কাজ, এবং বাঁশের কাজ। ধান, নারিকেল, সুপারি, এবং শাকসবজি প্রধান রপ্তানিদ্রব্য।
শিক্ষার দিক থেকে, বাবুগঞ্জ কলেজ, আবুল কালাম কলেজ, আগরপুর কলেজ, এবং অন্যান্য মাধ্যমিক বিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য। উল্লেখযোগ্য জলাশয়ের মধ্যে রয়েছে দুর্গাসাগর দীঘি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাবুগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘর্ষ হয়। চাঁদপাশা ইউনিয়নের কারিকরনগর গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া এবং বহু মানুষ নিহত হয়।
বাবুগঞ্জ উপজেলার আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেলে, আমরা আপনাকে অবগত করব।