বঙ্গবন্ধু

শেখ মুজিবুর রহমান: বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও জাতির জনক

১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণকারী শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য অধ্যায়। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়, তিনি পাকিস্তান আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন। ভারত বিভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে তিনি নেতৃত্ব দান করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত হন এবং ধীরে ধীরে বাঙালি জাতীয়তাবাদের এক অনন্য নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তাঁর ঐতিহাসিক ছয় দফা কর্মসূচী পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে সুদৃঢ় করে তুলেছিল।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অভূতপূর্ব বিজয়ের পরও ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়নি। ফলে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি স্বাধীনতার আন্দোলন শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। যুদ্ধের পর তিনি দেশে ফিরে ১৯৭২ সালে প্রথম রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী হন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে তিনি অসাধারণ ভূমিকা পালন করেন। সংবিধান প্রণয়ন, শিক্ষা ও অর্থনীতির উন্নয়ন, পররাষ্ট্রনীতি তৈরি, মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন, এক কোটি শরণার্থীকে পুনর্বাসনসহ অনেক কাজে তিনি কৃতিত্ব দেখান। তিনি “সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়” নীতি অনুসরণ করেছেন।

তবে তাঁর শাসনামলে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়। একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তিনি সপরিবারে নিহত হন। তাঁর হত্যার ঘটনা এখনো বাংলাদেশের ইতিহাসের এক কলঙ্ক।

বিবিসি কর্তৃক পরিচালিত জনমত জরিপে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের জনগণ তাকে জাতির জনক হিসেবে সম্মান করে। তাঁর জীবন ও কর্ম বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেরণা স্থম্ব।

মূল তথ্যাবলী:

  • বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান
  • তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন
  • ছয় দফা দাবিতে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবি তুলে ধরেছিলেন
  • তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন
  • স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অসাধারণ ভূমিকা পালন করেন
  • ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে নিহত হন

গণমাধ্যমে - বঙ্গবন্ধু

শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।