ঢাকা মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী এলাকা বংশাল। ২৩°৪২´ থেকে ২৩°৪৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৪´ থেকে ৯০°২৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত এই থানার আয়তন ১.২ বর্গ কিমি। উত্তরে শাহবাগ ও পল্টন, দক্ষিণে কোতোয়ালী, পূর্বে সুত্রাপুর এবং পশ্চিমে চকবাজার থানা বংশালকে ঘিরে রেখেছে। ২০০৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালী থানার অংশ থেকে বংশাল থানা গঠিত হয়। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, বংশালের জনসংখ্যা ছিল ১৭৮,২৪১; যার মধ্যে পুরুষ ১১১,৫৭৫ এবং মহিলা ৬৬,৬৬৬। ধর্মীয়ভাবে, ১৭১,৫১২ মুসলিম, ৬,৬৪৭ হিন্দু, ৪২ বৌদ্ধ এবং ৪০ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী বাসিন্দা রয়েছে।
বংশালের অর্থনীতি মূলত ব্যবসা নির্ভর (৪৭.৯৯%)। চাকরি (২৮.৯৮%), শিল্প (২.৪৪%), এবং পরিবহণ ও যোগাযোগ (১.৪৯%) এরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। কৃষি অর্থনীতিতে নগণ্য অংশগ্রহণ করে (০.৩%)। উল্লেখযোগ্য বাজারগুলির মধ্যে রয়েছে নয়াবাজার, নাজিরা বাজার, মিরনজল্লা বাজার, ফুলবাড়ীয়া জাবোর সুপার মার্কেট, সিটি প্লাজা, নগর প্লাজা ইত্যাদি। জুতা ও প্লাস্টিক কারখানা এবং কারুশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজের মত কুটির শিল্প বংশালের অর্থনীতিতে অবদান রাখে।
শিক্ষার হার ৭১.৬১% (পুরুষ ৭৩.৮২%, মহিলা ৬৭.৮৭%)। আহমেদ বাওয়ানী কলেজ, আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বংশাল গার্লস হাইস্কুলসহ বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখানে অবস্থিত। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। আয়েশা (রা) জামে মসজিদ, তারা মসজিদ, বংশাল রোড বড় মসজিদসহ অনেক মসজিদ এবং মন্দির রয়েছে। বংশাল চৌরাস্তায় ‘কবুতর’ নামে পরিচিত একটি স্থাপনা বেশ আকর্ষণীয়। সিক্কাটুলি পার্ক এলাকার বিনোদনের একটি উল্লেখযোগ্য স্থান। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের প্রধান কার্যালয়ও বংশালে অবস্থিত। বিদ্যুৎ ব্যবহারের হার ৯৮.৪২%, এবং পানীয় জলের প্রধান উৎস ট্যাপ (৮৩.৪২%)। স্যানিটেশন ব্যবস্থাও উন্নত; ৯৮.৫২% পরিবার স্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে।