ফ্যাসিজম: একটি বিশ্লেষণ
ইতালীয় শব্দ ‘fascismo’ ল্যাটিন শব্দ ‘fasces’ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ ‘লাঠির বান্ডিল’। প্রাচীন রোমে এটি সিভিক ম্যাজিস্ট্রেটের কর্তৃত্বের প্রতীক ছিল। ফ্যাসিজম শব্দটি প্রথমে ইতালির রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে বুঝাতে ব্যবহৃত হতো, যারা ‘ফ্যাসিস্ট’ নামে পরিচিত ছিল। বেনিতো মুসোলিনি ১৯১৯ সালে মিলানে ‘ইতালীয় ফ্যাসিস্ট পার্টি’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে ইতালির রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে।
ফ্যাসিজম, সাধারণত একটি কর্তৃত্ববাদী ও জাতীয়তাবাদী ডানপন্থী ব্যবস্থাকে বোঝায়। এটিতে ব্যক্তিস্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও বহুদলীয় ব্যবস্থার অভাব থাকে। একজন একনায়ক শাসক, অসহিষ্ণুতা এবং সামরিক শক্তির উচ্চ মূল্যায়ন ফ্যাসিজমের প্রধান বৈশিষ্ট্য। রাষ্ট্রের স্বার্থ ব্যক্তির স্বার্থের উপরে থাকে।
- *মুসোলিনি ও হিটলার:** বেনিতো মুসোলিনি ইতালির, আর অ্যাডলফ হিটলার জার্মানির ফ্যাসিবাদী শাসক ছিলেন। হিটলারের ন্যাৎসিবাদকে ফ্যাসিজমের একটি রূপ হিসেবে দেখা হয়। ফ্যাসিজমের উত্থান প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের অস্থির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ফলাফল ছিল।
- *ফ্যাসিজমের বৈশিষ্ট্য:**
- **চরম জাতীয়তাবাদ:** নিজ জাতির উচ্চতা ও অন্য জাতির প্রতি ঘৃণা।
- **একনায়কতন্ত্র:** ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন একজন শাসকের হাতে।
- **স্বৈরাচারী শাসন:** ব্যক্তিস্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের অভাব।
- **বলপ্রয়োগ:** বিরোধীদের দমন করার জন্য শক্তি প্রয়োগ।
- **গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ:** তথ্য নিয়ন্ত্রণ ও প্রচার।
- **সামরিকতা:** সামরিক শক্তির উচ্চ মূল্যায়ন ও সম্প্রসারণবাদ।
- *ফ্যাসিজমের প্রভাব:** দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ ও ভয়াবহতা ফ্যাসিজমের নেতিবাচক প্রভাবের অন্যতম উদাহরণ। ফ্যাসিজমের ধারণা ও প্রভাব আজকের বিশ্বেও বিদ্যমান, বিভিন্ন উগ্র ডানপন্থী আন্দোলনে তা লক্ষ্য করা যায়।