ফার্স্ট লেডি: একটি বিশ্লেষণ
‘ফার্স্ট লেডি’ (ইংরেজি: First Lady) শব্দটি বিশ্বের অনেক দেশে রাষ্ট্রপ্রধানের স্ত্রীকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি অনানুষ্ঠানিক উপাধি, যা জনগণ এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রচলিত হয়েছে। পুরুষ রাষ্ট্রপ্রধানের স্ত্রীর ক্ষেত্রে ‘ফার্স্ট জেন্টেলম্যান’ উপাধি ব্যবহার করা হয়। কলম্বিয়া ও প্যারাগুয়েতে ‘প্রাইমেরা দামা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
উৎপত্তি:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৮৪০ সালের দিকে এই উপাধির ব্যবহার শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জ্যাকারী টেলরের স্ত্রী ডলি মেডিসনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশে লেখা কবিতায় তাকে ‘ফার্স্ট লেডি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাথমিক দিনগুলিতে প্রেসিডেন্টের স্ত্রীর কোন নির্দিষ্ট পদবী ছিল না। বিভিন্ন সময় ‘লেডি’, ‘মিশেস প্রেসিডেন্ট’, ‘মিশেস প্রেসিডেন্ট্রেস’ এবং ‘কুইন অব দ্য হোয়াইট হাউজ’ শব্দগুলি ব্যবহার হত।
বিভিন্ন পরিস্থিতি:
অতীতে, প্রেসিডেন্টের স্ত্রী অক্ষম থাকলে, প্রেসিডেন্টের কন্যা, অথবা হোয়াইট হাউজে থাকা অন্য কোনো নারী ফার্স্ট লেডির দায়িত্ব পালন করতেন। ১৯৯৪ সালে পেরুর প্রেসিডেন্ট আলবার্টো ফুজিমোরির স্ত্রী সুসানা হিগুইচি'র সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর, তাঁর কন্যা কিকো ফুজিমোরি ফার্স্ট লেডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক চুং হির মৃত মাতার স্থলে তাঁর কন্যা পার্ক গিউন-হাই ফার্স্ট লেডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ডের সঙ্গী টিম ম্যাথিয়েসনকে ‘ফার্স্ট ব্লোক’ বলা হত। বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতির স্ত্রীকেই ফার্স্ট লেডি বলে অভিহিত করা হয়। বর্তমানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের স্ত্রী রশীদা হামিদ ফার্স্ট লেডি।
বর্তমান প্রসঙ্গ:
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে রাষ্ট্রপ্রধানের স্ত্রীদের ফার্স্ট লেডি বলা হলেও, যদি কোন দেশে তাঁদের অন্য কোনো উপাধি থাকে, সেক্ষেত্রে সেই নিয়ম অনুসরণ করা হয়। ফার্স্ট লেডিরা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, সামাজিক কার্যক্রমে জড়িত থাকেন, এবং রাষ্ট্রপ্রধানের পাশে থেকে রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে, তাঁদের দায়িত্ব ও ভূমিকা দেশ অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।