প্রতিবাদ: অসম্মতির স্বর, পরিবর্তনের পথ
মানব সভ্যতার ইতিহাস প্রতিবাদের ইতিহাস। অধিকার আদায়, অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, পরিবর্তনের দাবিতে মানুষ সবসময়ই সোচ্চার হয়েছে। প্রতিবাদ শুধুমাত্র রাজনৈতিক অসন্তোষের প্রকাশ নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক অধিকার, যা সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন এনেছে।
প্রাচীনকাল থেকেই প্রতিবাদের বিভিন্ন রূপ দেখা যায়। প্রাচীন গ্রিসে গণতন্ত্রের জন্য প্রতিবাদ, মধ্যযুগে ধর্মীয় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন – প্রতিটি ইতিহাস প্রতিবাদের প্রমাণ বহন করে। আধুনিক যুগে প্রযুক্তি এবং যোগাযোগের বিকাশে প্রতিবাদ আরও সংগঠিত এবং ব্যাপক হয়েছে।
১৯৬০-এর দশকে আমেরিকার নাগরিক অধিকার আন্দোলন, ১৯৮৯ সালে চীনের তিয়ানআনমেন স্কয়ারের গণ-প্রতিবাদ, ২০১১ সালের আরব বসন্ত – এই সকল ঘটনা প্রমাণ করে যে জনগণের সোচ্চার প্রতিবাদ ইতিহাসের ধারা পরিবর্তন করতে পারে। তবে, প্রতিবাদের রূপ ভিন্ন হতে পারে; শান্তিপূর্ণ মিছিল, বিক্ষোভ, ঘেরাও, অনশন – সবই প্রতিবাদের অংশ।
কিন্তু প্রতিবাদ সবসময় শান্তিপূর্ণ হয় না। কখনও কখনও এটি হিংসাত্মক আকার ধারণ করে। হিংসাত্মক প্রতিবাদ গুরুতর পরিণতি সৃষ্টি করতে পারে, যা জনসাধারণের জনজীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই প্রতিবাদ যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন, শান্তিপূর্ণ ও অহিংস পদ্ধতিতে প্রতিবাদ করার উপর জোর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতেও প্রতিবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বাধীনতা পরবর্তী কালে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রসঙ্গে জনগণ প্রতিবাদ করেছে। এই প্রতিবাদগুলির কারণে অনেক সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আরও গবেষণার আবশ্যকতা থাকে।