পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই): বাংলাদেশের অপরাধ তদন্তের এক নতুন অধ্যায়
২০১২ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর, ৯৭০ জনবল নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর আদলে গঠিত এই সংস্থাটি জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ অপরাধের তদন্তে নিয়োজিত। প্রাথমিকভাবে ডাকাতি, খুন, দস্যুতা, নারী ও শিশু নির্যাতন, অগ্নি সংযোগ, সাইবার অপরাধ এবং ব্যবসায়িক অপরাধের মতো জটিল ঘটনার তদন্তে পিবিআই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
৫ই জানুয়ারি ২০১৬ সালে পিবিআই-এর জন্য একটি নিজস্ব বিধিমালা অনুমোদিত হওয়ার পর তাদের তদন্ত কার্যক্রম আরও ব্যাপক ও আনুষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। বর্তমানে ২০২০ জনবল নিয়ে বাংলাদেশের ৪২টি জেলায় ৪৯টি ইউনিটে পিবিআই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রতিটি ইউনিট একজন পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে কাজ করে। পিবিআই-এর সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হলেন একজন অতিরিক্ত আইজিপি। অপারেশনাল সুবিধার্থে পিবিআই-কে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল—এই দুই অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে, যার প্রতিটি অঞ্চলের নেতৃত্বে রয়েছেন একজন অতিরিক্ত ডিআইজি।
পিবিআই-এর কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে জিআর ও সিআর মামলা তদন্ত, সন্ত্রাসবাদী হামলার তথ্য সংগ্রহ, মানব পাচারের তদন্ত এবং সাইবার ফরেনসিক বিশ্লেষণ। পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের অধীনে এসআইএন্ডও, ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব, সিটিইউ ও অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট কার্যক্রম পরিচালনা করে। পিবিআই-এর কর্মকর্তারা এফবিআই ও মার্কিন পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন, যা তাদের তদন্ত কৌশলকে আধুনিক ও কার্যকর করে তুলেছে।
২০১১ সালে পুলিশ আইনের একটি ধারার ক্ষমতাবলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে পিবিআই গঠিত হয়। গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল অপরাধের তদন্তে পিবিআই-এর ভূমিকা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তারা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।