একুশে পদকপ্রাপ্তা রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ারের স্মৃতিচারণ
বাংলাদেশের সংগীত জগতের এক অমূল্য সম্পদ, একুশে পদকপ্রাপ্তা বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ারের (২১ নভেম্বর ১৯৫২ - ১২ ডিসেম্বর ২০২৪) মৃত্যুতে গভীর শোকাহত হয়েছি। তার মৃদু কণ্ঠ, মনোমুগ্ধকর গান এবং সংগীত জগতে অবদান আমাদের মনে চিরস্মরণীয় থাকবে।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন: পাপিয়া সারোয়ারের জন্ম ১৯৫২ সালের ২১শে নভেম্বর বরিশালে। ছোটবেলা থেকেই সংগীতে তার প্রবল আগ্রহ ছিল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। তবে তার প্রকৃত পরিচয় রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী হিসেবে।
সংগীত জীবন: ১৯৬৬ সালে পাপিয়া সারোয়ার ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সানজীদা খাতুন ও জাহেদুর রহিমের কাছে সংগীত শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরে তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতেও সংগীত চর্চা করেন। ১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে তিনি শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি অর্জন করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্রসংগীতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারী তিনিই প্রথম ব্যক্তি।
তার গাওয়া ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। রবীন্দ্রসংগীত ছাড়াও তিনি আধুনিক গানেও দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। তার গানের অ্যালবামও প্রকাশিত হয়েছে।
পুরস্কার ও সম্মাননা: পাপিয়া সারোয়ারের সংগীত জীবন ছিল পুরস্কারে ভরপুর। তিনি ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র পুরস্কার, ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ এবং ২০২১ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এই পুরস্কারগুলি তার অসামান্য প্রতিভার স্বাক্ষর।
ব্যক্তিগত জীবন: পাপিয়া সারোয়ার ১৯৭৮ সালে মোহাম্মদ সারোয়ার আলমকে বিবাহ করেন। তাদের দুই কন্যা।
মৃত্যু: দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভোগার পর ২০২৪ সালের ১২ই ডিসেম্বর ৭২ বছর বয়সে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন পাপিয়া সারোয়ার। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের সংগীত জগত একটি অমূল্য সম্পদ হারিয়েছে।
disambiguousTitle