নয়াদিল্লি: ভারতের রাজধানী ও একটি ঐতিহাসিক নগরী
নয়াদিল্লি, ভারতের রাজধানী এবং দিল্লি জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের (NCT) একটি অংশ। ১৯১১ সালে পঞ্চম জর্জ কর্তৃক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর ব্রিটিশ স্থপতি স্যার এডউইন লুটিয়েন্স ও স্যার হারবার্ট বেকারের নকশায় নির্মিত এই শহরটি ১৯৩১ সালে উদ্বোধন করা হয়। কলকাতা থেকে রাজধানী স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের পেছনে ব্রিটিশ সরকারের উত্তর ভারত থেকে দেশ শাসন করার সহজতর পরিকল্পনা কাজ করেছিল।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:
নয়াদিল্লি সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমিতে অবস্থিত এবং যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। এর আয়তন ৪২.৭ বর্গকিলোমিটার এবং ২০২৩ সালের হিসেবে জনসংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষ। জনঘনত্ব অত্যন্ত উচ্চ। নগরটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত। জলবায়ু মৌসুমি, গ্রীষ্মে অত্যন্ত উত্তপ্ত এবং শীতে ঠান্ডা।
ঐতিহাসিক ঘটনা ও স্থাপত্য:
নয়াদিল্লির স্থাপত্যে ব্রিটিশ ক্লাসিক্যাল ও প্যালেডিয়ান স্থাপত্যশৈলীর প্রভাব স্পষ্ট। রাষ্ট্রপতি ভবন (ভাইসরয়ের প্রাক্তন বাসভবন), কেন্দ্রীয় সচিবালয়, সংসদ ভবন, ইন্ডিয়া গেট, কনট প্লেস উল্লেখযোগ্য স্থাপনা। ইন্ডিয়া গেট প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে নিহত ভারতীয় সৈন্যদের স্মরণে নির্মিত। কর্ডোন পথ (পূর্বে কিংসওয়ে) ও জনপথ (পূর্বে কুইন্সওয়ে) দুটি কেন্দ্রীয় প্রমোদপথ।
অর্থনৈতিক কার্যকলাপ:
নয়াদিল্লি ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যকেন্দ্র। তথ্যপ্রযুক্তি, টেলিকমিউনিকেশন, হোটেল, ব্যাংকিং, গণমাধ্যম ও পর্যটন এখানকার প্রধান শিল্প। বিশ্ব সম্পদ রিপোর্ট অনুযায়ী, অর্থনৈতিক কার্যকলাপের দিক থেকে উল্লেখযোগ্য অবস্থানে রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও আকর্ষণ:
রাষ্ট্রপতি ভবন, সংসদ ভবন, ইন্ডিয়া গেট, জন্তর মন্তর, কুতুব মিনার, লোডি উদ্যান, গান্ধী স্মৃতি, বিভিন্ন জাদুঘর ও স্মৃতিস্তম্ভ।
উপসংহার:
নয়াদিল্লি শুধুমাত্র ভারতের রাজধানী নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর। এটির স্থাপত্য, ঐতিহাসিক স্থান, বহুজাতিক সংস্কৃতি এবং দ্রুত উন্নয়ন একে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় শহরে পরিণত করেছে।