নাটোর জেলার লালপুর উপজেলা

আপডেট: ৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৩৫ এএম

নাটোর জেলার লালপুর উপজেলা: ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ও বর্তমান রূপ

লালপুর উপজেলা, বাংলাদেশের নাটোর জেলার অন্তর্গত একটি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। আয়তনের দিক থেকে নাটোর জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা হিসেবে পরিচিত। ১৮৬৯ সালে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৯৮৩ সালে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে এটি উপজেলায় উন্নীত হয়। লালপুর নামকরণের সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য না থাকলেও, জনশ্রুতি অনুযায়ী মুঘল আমলে এখানে লালখান নামে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বসবাস করতেন এবং তার নামানুসারেই উপজেলার নামকরণ হয়েছে।

ভৌগোলিক অবস্থান ও সীমানা:

লালপুর উপজেলা পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। উত্তরে বাগাতিপাড়া ও বড়াইগ্রাম উপজেলা, দক্ষিণে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলা, কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলা, পূর্বে বড়াইগ্রাম ও কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলা এবং পশ্চিমে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলা অবস্থিত।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

লালপুরের ইতিহাস বহু প্রাচীন। প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১৬০০ বছর পূর্বে গুপ্ত রাজাদের সময় থেকেই এখানে আর্য সভ্যতার বিস্তার ছিল। ধানাইদহ গ্রামে আবিষ্কৃত একটি তাম্রশাসন ৪৩২ খ্রিস্টাব্দে বড়াইগ্রাম থানার এক ব্রাহ্মণকে ভূমি দানের কথা উল্লেখ করে। সেন আমলের নগর দুর্গ ও বিজয়স্তম্ভের সন্ধানও এখানে পাওয়া গেছে। মুঘল আমলে ঈশ্বরদীতে ঈশা খানের দুর্গ বা থানা ছিল যা পরে ইশ্বরদী নামে পরিচিত হয়। ১৮২৭ সালে পদ্মা নদী ও চলনবিল অঞ্চলে জলদস্যুর আগ্রাসনের কারণে লালপুরে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়। ১৮৬৯ সালে লালপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস:

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে লালপুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ৩০ মার্চ ওয়ালিয়া ইউনিয়নের বড় ময়নায় নাটোর জেলার প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয়, যেখানে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি গণকবর ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।

জনসংখ্যা ও অর্থনীতি:

লালপুরের জনসংখ্যা ও অর্থনীতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। উপজেলার অধিকাংশ জনগোষ্ঠী কৃষিকাজের সাথে জড়িত। নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস লিমিটেড লালপুরের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ:

লালপুরের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটল, নাটোরের নেতা শহীদ মমতাজ উদ্দীন, কৃষক নেতা আজহার আলী প্রামাণিক, প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ও মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা রেজওয়াদুদ মাহিন অন্যতম।

আরো তথ্যের জন্য:

উপজেলার আরও বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করার জন্য আমরা পরবর্তীতে আপডেট প্রদান করব।

মূল তথ্যাবলী:

  • লালপুর নাটোর জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা
  • ১৮৬৯ সালে থানা, ১৯৮৩ সালে উপজেলায় উন্নীত
  • প্রাচীন ইতিহাস ও আর্য সভ্যতার নিদর্শন
  • ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
  • কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি ও নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - নাটোর জেলার লালপুর উপজেলা

৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

নাটোর জেলার লালপুর উপজেলায় মো. কলিমউদ্দিনের বাড়ি।