নাটোরের উত্তরা গণভবন

আপডেট: ২ জানুয়ারী ২০২৫, ৭:০৮ এএম

নাটোরের উত্তরা গণভবন: ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বর্তমান

নাটোর শহরের কাছে অবস্থিত দিঘাপাটিয়া রাজবাড়ি, বর্তমানে উত্তরা গণভবন নামে পরিচিত, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনা। ১৭৩৪ সালে দিঘাপাটিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা রাজা দয়ারাম রায় প্রায় ৪৩ একর জমির উপর এই প্রাসাদের মূল অংশ নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে ১৮৯৭ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর রাজা প্রমোদনাথ রায় ১১ বছর ধরে এটিকে পুনর্নির্মাণ করেন। বিদেশি ও দেশি বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে তিনি মোগল ও প্রাচ্য শৈলীর মিশ্রণে এই রাজবাড়িটিকে নয়নাভিরাম করে তোলেন।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর রাজপরিবার ভারতে চলে যান। ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে রাজবাড়ির রক্ষণাবেক্ষণে সমস্যা দেখা দেয়। ১৯৬৭ সালে এটি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১৯৭২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটিকে উত্তরা গণভবন নামকরণ করেন এবং একই দিন এখানে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এই প্রাসাদে মোট ১২ টি ভবন রয়েছে, যেমনঃ মূল প্রাসাদ ভবন, কুমার প্রাসাদ, প্রধান কাচারি ভবন, ৩টি কর্তারাণী বাড়ি, রান্নাঘর, মোটর গ্যারেজ, ইত্যাদি। মূল্যবান কাঠের দরজা-জানালা, সুন্দর বাগান এবং ফোয়ারা রয়েছে। প্রাসাদটি চারদিকে পরিখা ও উঁচু প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত। উল্লেখযোগ্য ইতালীয় বাগান এবং বিভিন্ন পুকুরও আছে।

২০১৮ সালের ৯ মার্চ উত্তরা গণভবন সংগ্রহশালা স্থাপিত হয়। এখানে রাজপরিবারের বিভিন্ন ঐতিহাসিক দ্রব্য, আসবাবপত্র, ছবি, লিপি এবং অন্যান্য দুষ্প্রাপ্য সামগ্রী সংরক্ষিত রয়েছে। বর্তমানে দর্শনার্থীদের জন্য উত্তরা গণভবন উন্মুক্ত, তবে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে আরও তথ্য সংযুক্ত করতে পারব।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৭৩৪ সালে রাজা দয়ারাম রায় দিঘাপাটিয়া রাজবাড়ির নির্মাণ শুরু করেন।
  • ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পের পর রাজা প্রমোদনাথ রায় এটিকে পুনর্নির্মাণ করেন।
  • ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটিকে উত্তরা গণভবন নামকরণ করেন।
  • উত্তরা গণভবনে একটি সংগ্রহশালা রয়েছে যাতে রাজপরিবারের ঐতিহাসিক সামগ্রী সংরক্ষিত আছে।
  • বর্তমানে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত, তবে প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - নাটোরের উত্তরা গণভবন

২০০৮

উত্তরা গণভবনের বেশিরভাগ অংশ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।