নাটোর

নাটোর: বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহাসিক ও প্রকৃতির কোলে অবস্থিত জেলা শহর। রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত এই শহরটি ৩৯.৮৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং জনসংখ্যা প্রায় ১,৪৭,১৯৮। রেল ও সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকলেও, বিমানবন্দর নেই। নাটোর কাঁচাগোল্লা, বনলতা এবং অর্ধ বঙ্গেশ্বরী রানী ভবানীর জন্য বিখ্যাত।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

১৭০৬ সালে (অন্য মতে ১৭১০) গণেশ রায় ও ভবানী চরণ চৌধুরীর চাকরিচ্যুতির পর রামজীবন নাটোর রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন। ১৭৩০ সালে রানী ভবানীর সাথে রামকান্তের বিয়ে হয়। রানী ভবানীর রাজত্বকালে নাটোরের অধীনে ছিল বর্তমান রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, যশোর, রংপুর, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, মালদহ পর্যন্ত এলাকা। ১৮৫৯ সালে নাটোর পৌরসভা গঠিত হয়, যা অবিভক্ত বাংলার দ্বিতীয় পৌরসভা। ১৯৮৪ সালে এটি জেলা শহরের মর্যাদা পায়।

ভৌগোলিক অবস্থান ও আবহাওয়া:

নাটোর রাজশাহী থেকে পূর্বে ও বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে পশ্চিমে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ২৩ মিটার। বছরের অধিকাংশ সময় ক্রান্তীয় গরম ও শুষ্ক আবহাওয়া থাকে। গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১৫৫৬ মিলিমিটার।

অর্থনীতি:

নাটোরের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। অনেক ব্যাংক ও বীমা কর্পোরেশনের শাখা রয়েছে। নাটোর সুগার মিল একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প প্রতিষ্ঠান।

যোগাযোগ:

নাটোরের রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত। নাটোর রেলওয়ে স্টেশন জেলার প্রধান রেলস্টেশন। নিকটবর্তী বিমানবন্দর শাহ মখদুম বিমানবন্দর।

শিক্ষা:

নাটোরে বেশ কিছু কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। নবাব সিরাজউদৌলা সরকারি কলেজ একটি উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

দর্শনীয় স্থান:

নাটোর রাজবাড়ি, দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ি, মদনমোহন রথ, রানী ভবানীর কেল্লা প্রমুখ।

মুক্তিযুদ্ধ:

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নাটোরে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলি এখনো দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।

মূল তথ্যাবলী:

  • নাটোর রাজশাহী বিভাগের একটি ঐতিহাসিক জেলা শহর।
  • রানী ভবানী ও কাঁচাগোল্লার জন্য বিখ্যাত।
  • ১৭০৬ সালে নাটোর রাজবংশের প্রতিষ্ঠা।
  • ১৮৫৯ সালে পৌরসভা গঠন।
  • ১৯৮৪ সালে জেলা শহরের মর্যাদা লাভ।