দেলদুয়ার: টাঙ্গাইলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা
টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলা ১৮৪.৫৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের একটি অঞ্চল। ২৪°০৫´ থেকে ২৪°১৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫০´ থেকে ৮৯°৫৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত এ উপজেলা উত্তরে টাঙ্গাইল সদর ও বাসাইল, দক্ষিণে নাগরপুর, পূর্বে মির্জাপুর এবং পশ্চিমে নাগরপুর ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলা দ্বারা বেষ্টিত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, দেলদুয়ারের জনসংখ্যা ২০৭২৭৮; এর মধ্যে পুরুষ ১০০৬৩৮ এবং মহিলা ১০৬৬৪০। ধর্মীয়ভাবে, ১৮৩৯৯০ জন মুসলিম, ২৩২৭৪ জন হিন্দু, এবং অতি সামান্য সংখ্যক বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান বাসিন্দা রয়েছে। ধলেশ্বরী নদী ও গুমলী খাল এ উপজেলার উল্লেখযোগ্য জলাশয়।
১৯৮১ সালে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৩ সালে দেলদুয়ার উপজেলায় রুপান্তরিত হয়। ঐতিহাসিক দিক থেকে, ১৬০৬ সালে নির্মিত আতিয়া মসজিদ এ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থল। মুক্তিযুদ্ধের সময়, ৩ এপ্রিল ১৯৭১ সালে সাটিয়াপাড়া-গোড়ান এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। পরে অক্টোবর মাসে ঐ-খোলা, মঙ্গলহোড়, গজিয়াবাড়ি-গমজানি, আটিয়া, হিংগানগর ও এলাসিনে বড় ধরনের যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
দেলদুয়ারের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, পাট, সরিষা, আখ, আলু, গম এখানকার প্রধান কৃষি ফসল। আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, পেঁপে প্রধান ফলফলাদি। কৃষির পাশাপাশি বাঁশ ও বেতশিল্প, মৃৎশিল্প কুটিরশিল্প হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ৫৫টি হাটবাজার এবং ৬টি মেলা এ উপজেলার বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে সমৃদ্ধ করে। দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি এবং হিংগানগরের রাজবাড়ি এর দুটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র।
শিক্ষার দিক থেকে, দেলদুয়ারে সৈয়দ মহববত আলী ডিগ্রি কলেজ, সৈয়দ আবদুল জববার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বেলায়েত হোসেন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, ডা এফআরখান পাইলট ইনস্টিটিউট, বোরহানুল উলুম আহমদিয়া ইয়াছিনিয়া মাদ্রাসা সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ৫১.৬% শিক্ষার হার এ উপজেলার শিক্ষার অবস্থা প্রতিফলিত করে। স্বাস্থ্য সেবার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ক্লিনিক রয়েছে। যোগাযোগের জন্য পাকা, আধা-পাকা ও কাঁচা রাস্তা এ উপজেলার বিভিন্ন অংশকে সংযুক্ত করে।