তিউনিসিয়া: উত্তর আফ্রিকার একটি ঐতিহাসিক ও পর্যটন কেন্দ্র
তিউনিসিয়া (আরবি: تونس), সরকারী নাম তিউনিসীয় প্রজাতন্ত্র (আরবি: الجمهورية التونسية), উত্তর আফ্রিকার উপকূলে ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত একটি দেশ। এটলাস পর্বতমালা দেশটিকে উত্তরের উর্বর সমভূমি এবং দক্ষিণের শুষ্ক, উষ্ণ মরুভূমি অঞ্চলে বিভক্ত করেছে। ধারণা করা হয় তিউনিস নামটি বার্বার ভাষা থেকে এসেছে, যার অর্থ "শৈলান্তরীপ" বা "রাত কাটাবার স্থান"। তিউনিস দেশটির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। আয়তনের দিক থেকে তিউনিসিয়া অন্যান্য উত্তর আফ্রিকান দেশের তুলনায় ছোট। আলজেরিয়া এর পশ্চিমে এবং লিবিয়া দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। দেশটির ৪৫% এলাকা সাহারা মরুভূমির আওতায় পড়েছে।
তিউনিসিয়ার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। ফিনিসীয়, কার্থেজীয়, রোমান, আরব এবং উসমানীয় তুর্কি সভ্যতার সাথে দীর্ঘ সময় ধরে এর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। প্রাচীন কার্থেজের ধ্বংসাবশেষ এবং কাইরোয়ানের মহান মসজিদ (The Great Mosque of Kairouan) এ দেশের ঐতিহাসিক গৌরবের সাক্ষী। ১৮৮১ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিউনিসিয়া ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। ১৯৫৬ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। হাবিব বোরগুইবা দীর্ঘদিন দেশটির রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং তাকে আধুনিক তিউনিসিয়ার জনক বলা হয়।
আরব বসন্তের সূচনা তিউনিসিয়াতেই। ২০১১ সালের বিপ্লবের মাধ্যমে দীর্ঘদিন শাসনরত জিন এল আবিদিন বেন আলির সরকারের পতন ঘটে এবং দেশটি গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে যায়। তবে পরবর্তীতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। ২০১৫ সালে পর্যটকদের ওপর হামলায় ৩৮ জন নিহত হয়।
তিউনিসিয়া বর্তমানে পর্যটকদের জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল। এর রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া, সুন্দর বেলাভূমি, বিচিত্র ভূ-প্রাকৃতিক দৃশ্য, সাহারার মরুদ্যান এবং রোমান প্রত্নস্থলগুলি বিখ্যাত। অর্থনীতি মূলত কৃষিকাজ, শিল্প, পর্যটন এবং খনিজ সম্পদ নির্ভর। তিউনিসিয়ার সংস্কৃতি আফ্রিকা মহাদেশের অন্যান্য দেশ থেকে অনেকটা আলাদা।
তিউনিসিয়া ২৪টি গভর্নরেট (উইলায়েত)-এ বিভক্ত। দেশটিতে মোট ২৬৪টি জেলা (মুতামাদিয়াত) রয়েছে। জনসংখ্যার বেশিরভাগই (প্রায় ৯৯%) মুসলমান। অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম। ২০০৮ সালে সাক্ষরতার হার ছিল ৭৮%, যা ১৫-২৪ বয়সীদের জন্য ৯৭.৩%।
তিউনিসিয়া: আরব বসন্তের সূচনা এবং গণতান্ত্রিক সংকট
তিউনিসিয়া: একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা
তিউনিসিয়া: উত্তর আফ্রিকার সুন্দর দেশ