তথ্য সন্ত্রাস ও হলুদ সাংবাদিকতা: বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বর্তমান সংকট
বাংলাদেশের গণমাধ্যম বর্তমানে তথ্য সন্ত্রাস এবং হলুদ সাংবাদিকতার মতো নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউ) মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী সহ অনেক সাংবাদিক নেতা এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এই ধরনের অসৎ ও পক্ষপাতদুষ্ট সাংবাদিকতা সাংবাদিকদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে, জনগণের মধ্যে গণমাধ্যমের প্রতি অবিশ্বাস বাড়ায় এবং দেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে।
তথ্য সন্ত্রাসের সংজ্ঞা নিয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা আছে। এটা একক ব্যক্তি, সংগঠন, কিংবা একাধিক ব্যক্তি বা সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত একটি নেটওয়ার্ক হতে পারে। এরা ভুল তথ্য, গুজব, প্রচারণা ও অপপ্রচারের মাধ্যমে জনমতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। হলুদ সাংবাদিকতা, অপসাংবাদিকতা, এবং দলবাজির সাথে তথ্য সন্ত্রাসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্য মতে, গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পরিবর্তে স্বার্থনির্ভর সাংবাদিকতা বেশি প্রকট হয়েছে। সরকারের তরফ থেকেও গণমাধ্যমের ওপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ বাংলাদেশের প্রধান প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি, বরং বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
সাংবাদিক নেতারা গণমাধ্যমে সংস্কারের জন্য নতুন গঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সাথে আলোচনা করার এবং তৃণমূল পর্যায় থেকে সংস্কারের তাগিদ দিয়েছেন। সাংবাদিকদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও আহ্বান জানানো হয়েছে। সাগর-রুনি হত্যার ১২ বছর পূর্ণ হলেও বিচার না পাওয়ার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের দাবীও উঠেছে।
তথ্য সন্ত্রাস ও হলুদ সাংবাদিকতার প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে বস্তুনিষ্ঠ, সত্য ও নির্ভীক সাংবাদিকতা নিশ্চিত করার জন্য সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন নেতারা। জনগণের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে আবারও জাতীয় জীবনের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য তারা জোরাজোরি করেছেন।