ঢাকা কলেজ: বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
১৮৪১ সালের ২০শে নভেম্বর, উপমহাদেশের প্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা কলেজের যাত্রা শুরু। তৎকালীন ঢাকা ইংলিশ সেমিনারীকে কলেজে রূপান্তর করে এর নামকরণ করা হয় ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ, সংক্ষেপে ঢাকা কলেজ। প্রতিষ্ঠার পূর্বে ১৮৩৫ সালের ১৫ই জুলাই ঢাকা ইংলিশ সেমিনারী নামে একটি স্কুল চালু হয়। কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও হিন্দু কলেজের শিক্ষক জে. আয়ারল্যান্ড।
ব্রিটিশ শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত হলেও, ঢাকা কলেজ দেশের জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হলেও, পরবর্তীতে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। ১৮৭৫ সালে বিজ্ঞান ক্লাস চালু হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ঢাকা কলেজের অবদান অপরিসীম ছিল। কারজন হল, শহীদুল্লাহ হল (তৎকালীন ঢাকা হল) এবং জমি প্রদান করে ঢাকা কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে।
ঐতিহাসিক ভবন কার্জন হল ঢাকা কলেজের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ১৯০৪ সালে লর্ড কার্জন এর উদ্বোধন করেন। এছাড়াও, ঢাকা কলেজের বিভিন্ন ছাত্রাবাস, যেমন রাজচন্দ্র হিন্দু ছাত্রাবাস, সেক্রেটারিয়েট মুসলিম হোস্টেল (বর্তমান সলিমুল্লাহ মুসলিম হল) এর ইতিহাসও রয়েছে। বর্তমানে ঢাকা কলেজে ৮টি ছাত্রাবাস রয়েছে।
বর্তমানে ঢাকা কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলা, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্স পরিচালনা করে। এটি দীর্ঘ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অবদানের জন্য বাংলাদেশের শিক্ষা জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে।