জ্বালানি: শক্তির উৎস ও ভবিষ্যৎ
জ্বালানি বলতে আমরা সাধারণত এমন সকল পদার্থকে বুঝি যার ভৌত বা রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে শক্তি নির্গত হয়। এই শক্তি আমরা বিদ্যুৎ, তাপ, গতি ইত্যাদি রূপে ব্যবহার করি। মানব সভ্যতার অগ্রযাত্রার ইতিহাসই হলো জ্বালানির সন্ধান ও ব্যবহারের ইতিহাস। প্রাথমিক যুগে কাঠ, গোবর, তারপর কয়লা, পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস – এই জীবাশ্ম জ্বালানি মানুষের জীবনে বিপ্লব সাধন করেছে। কিন্তু এই জীবাশ্ম জ্বালানি সীমিত, পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ।
জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপত্তি:
জীবাশ্ম জ্বালানি – কয়লা, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস – কোটি কোটি বছর আগে পৃথিবীতে বিদ্যমান উদ্ভিদ ও প্রাণীর অবশেষ থেকে উচ্চচাপ ও তাপের কারণে তৈরি হয়েছে। এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীরগতি সম্পন্ন। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এই জীবাশ্ম জ্বালানির ভরাড্ড ভান্ডার আবিষ্কৃত হয়েছে। যেমন, মধ্যপ্রাচ্যের বিশাল তেলক্ষেত্র বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি:
জীবাশ্ম জ্বালানির সীমাবদ্ধতা ও পরিবেশগত প্রভাবের কারণে বিজ্ঞানীরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির উদ্ভাবন ও ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করছেন। সৌরশক্তি, পরমাণুশক্তি, বায়োফুয়েল (জৈব জ্বালানি), পানিশক্তি ইত্যাদি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উদাহরণ। বায়োফুয়েল উৎপাদনের জন্য উদ্ভিদ, প্রাণীজ অবশেষ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এই জ্বালানি পরিবেশ বান্ধব এবং নিরাপদ।
জ্বালানির ভবিষ্যৎ:
বিশ্বের বর্ধমান জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক বিকাশের কারণে জ্বালানির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই জ্বালানির ব্যবহার কুশলী এবং পরিবেশ বান্ধব হওয়া অত্যন্ত জরুরী। নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর নির্ভরতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে এবং জ্বালানির দক্ষতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যৎ জন্য জ্বালানির সুরক্ষা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ করা সম্ভব।