জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল: বাংলাদেশে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের নতুন পথ
বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য একটি স্বাধীন ‘জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এর নেতৃত্বে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যা বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
২০২৩ সালের ১১ই আগস্ট প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতায় গুরুত্বারোপ করেন। তিনি মাসদার হোসেন মামলার রায় বাস্তবায়ন, পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, স্বতন্ত্র বাজেট বরাদ্দ, এবং অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদায়ন ও বদলির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। এই উদ্যোগেরই ধারাবাহিকতায় জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত কাউন্সিলের মোট ১০ জন সদস্য থাকবে, যাদের মধ্যে প্রধান বিচারপতি চেয়ারম্যান হবেন। অন্যান্য সদস্যরা হলেন: আপিল বিভাগের দুইজন জ্যেষ্ঠ বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগের দুইজন জ্যেষ্ঠ বিচারক (যার মধ্যে একজন অধস্তন আদালত থেকে উন্নীত), অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক মনোনীত একজন আইন অধ্যাপক এবং দুইজন নাগরিক প্রতিনিধি।
কাউন্সিল রাষ্ট্রপতির কাছে বিচারক পদে উপযুক্ত প্রার্থীদের সুপারিশ করবে। তারা সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করবে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান করতে পারবে। কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে গৃহীত হবে। এই কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছতা, ন্যায়সঙ্গততা এবং স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যেই এ ধরণের স্বাধীন কমিশন বিদ্যমান।