জাল সনদে শিক্ষক নিয়োগ: দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় একটি গুরুতর সমস্যা
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় জাল সনদ ব্যবহার করে চাকরি পাওয়ার ঘটনা বর্তমানে একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সম্প্রতি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাল সনদে নিয়োগপ্রাপ্ত ৬৭৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনাটি শুধুমাত্র একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং একটি ব্যাপক সমস্যার ইঙ্গিত বহন করে।
পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) ২০১৩ সাল থেকে ২৫ মে ২০২৩ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা চালিয়ে মোট ১ হাজার ১৫৬ জন শিক্ষকের শিক্ষাগত ও যোগ্যতার সনদ ভুয়া বলে তথ্য পেয়েছে। এদের মধ্যে ৭৯৩ জন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)-এর ভুয়া সনদ দেখিয়ে চাকরি করেছেন। বাকিদের কম্পিউটার শিক্ষা, বিএড, গ্রন্থাগার, সাচিবিক বিদ্যা ও অন্যান্য বিষয়ের জাল সনদ ব্যবহারের তথ্য পাওয়া গেছে।
এই জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সাত ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চাকরিচ্যুত, বেতন-ভাতা ফেরত, ফৌজদারি মামলা, নিয়োগ কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি। ৬৭৮ জন শিক্ষকের কাছ থেকে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ফেরত নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এই ঘটনাগুলো দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে পরিচালনা কমিটির একচ্ছত্র ক্ষমতা, এনটিআরসিএর নিয়োগ পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা এবং সনদ যাচাই-বাছাইয়ের অপ্রতুলতা এই সমস্যার কিছু কারণ হতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই সমস্যার সমাধানে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশা করা হচ্ছে। জাল সনদ রোধে আরও কঠোর নীতিমালা এবং তদারকি প্রয়োজন।