জলবায়ু পরিবর্তন: একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমান বিশ্বের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলির একটি। ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি, অর্থাৎ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, এর প্রধান লক্ষণ। ১৮৬০-১৯০০ সালের তুলনায় বিশ্বের তাপমাত্রা ০.৭৫°সে. (১.৪° ফা.) বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধি মূলত মানুষের কার্যক্রমের ফলে, বিশেষ করে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে।
নাসা-র (NASA) গডার্ড ইনস্টিটিউট ফর স্পেস স্টাডিজ-এর (Goddard Institute for Space Studies) তথ্য অনুযায়ী, ২০০৫ সাল ছিল ইতিপূর্বে লিপিবদ্ধ উষ্ণতম বছর। শেষ ৫০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব স্পষ্টতই দেখা যায়। কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, এবং অন্যান্য গ্রীনহাউস গ্যাসের বৃদ্ধি পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
এই গ্যাসগুলি সূর্যের তাপকে আটকে রেখে পৃথিবীকে উষ্ণ করে। গ্রীনহাউস গ্যাসের বৃদ্ধি কেবল তাপমাত্রা বৃদ্ধিই নয়, বরং বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ও মেরু অঞ্চলে বরফ গলনের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, গ্রিস এবং স্পেনে সম্প্রতি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এই পরিবর্তনের প্রভাবেরই প্রমাণ।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের আন্তঃসরকার প্যানেল (আইপিসিসি) এর মতো সংস্থাগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও সমাধানের উপায় নিয়ে গবেষণা এবং প্রতিবেদন প্রকাশ করে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ানো, বন সংরক্ষণ, এবং জীবনযাত্রার ধরণে পরিবর্তন আনা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভোক্তাবাদ কমানো, একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক যা অনেক গবেষকই উল্লেখ করেছেন, যেহেতু এটি পরিবেশ দূষণের একটি বড় কারণ। জলবায়ু পরিবর্তন একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা এবং এর সমাধানের জন্য সকল দেশ এবং মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।