জর্ডানের সরকার একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের উপর ভিত্তি করে গঠিত। রাজা দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদকে নিয়োগ দেন এবং তাদের কাজের জন্য দায়ী থাকেন। জর্ডানের সংবিধান ১৯৫২ সালের ৮ই জানুয়ারী ঘোষণা করা হয়।
জর্ডানের রাজনৈতিক ব্যবস্থা:
জর্দানের রাজনীতিতে একটি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ রয়েছে। নিম্নকক্ষ হলো 'চেম্বার অব ডেপুটিস' (মজলিস আল-নওয়াব), যার ১৩০ জন সদস্য জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়। উচ্চকক্ষ হলো 'সিনেট' (মজলিস আল-আয়ান), যার ৬৫ জন সদস্য রাজা নির্বাচিত করেন। সংসদের কাজ হলো আইন প্রণয়ন এবং সরকারের ওপর নজরদারি করা। তবে রাজার ক্ষমতা বেশি শক্তিশালী, তিনি সংসদ ভেঙে দিতে এবং প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে পারেন।
ঐতিহাসিক দিক:
১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর জর্দানের সরকার গঠিত হয়। এরপর থেকে বেশ কয়েকজন রাজা দেশ শাসন করেছেন। রাজা আব্দুল্লাহ প্রথম (১৯৪৬-১৯৫১), রাজা তালাল (১৯৫১), রাজা হুসেন (১৯৫৩-১৯৯৯), এবং বর্তমান রাজা আব্দুল্লাহ দ্বিতীয় (১৯৯৯ থেকে)। রাজা হুসেনের আমলে দেশে রাজনৈতিক উদারীকরণের চেষ্টা করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি পশ্চিম তীরের দাবী ত্যাগ করেন। ১৯৯৪ সালে ইসরাইলের সাথে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
আধুনিক জর্ডানের চ্যালেঞ্জ:
আরব বসন্তের প্রভাব, সিরিয়ান যুদ্ধ, এবং অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্য দিয়ে দেশটি অতিক্রম করেছে। সিরিয়ান উদ্বাস্তু সংকটের ফলে দেশটির অর্থনীতিতে চাপ পড়েছে। সরকার অর্থনৈতিক সংস্কারের চেষ্টা করছে, তবে দারিদ্র্য এবং বেকারত্বের হার এখনও উচ্চ। ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক জটিল, কারণ বহু জর্ডানী ফিলিস্তিনী উদ্বাস্তু।
প্রধানমন্ত্রী:
প্রধানমন্ত্রী সরকারের প্রধান হিসাবে কাজ করে এবং সংসদের কাছে জবাবদিহি করেন।
বিচার ব্যবস্থা:
জর্দানের বিচার বিভাগ সরকারের অন্য দুইটি অংশ থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন। তিন প্রকার আদালত আছে - জন আদালত (নিয়মিত আদালত), ধর্মীয় আদালত এবং বিশেষ আদালত।
জর্ডানের সরকার বহু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তবুও মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থির অঞ্চলে একটি স্থিতিশীল রাজ্য হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।