চুম্বন: একটি আবেগের ভাষা
চুম্বন, মাত্র দুটি ঠোঁটের স্পর্শ, কিন্তু এর মধ্যে লুকিয়ে থাকে অগাধ আবেগের সমারোহ। প্রেম, কাম, স্নেহ, শ্রদ্ধা, এমনকি শুভেচ্ছা প্রকাশের এক অসাধারণ মাধ্যম চুম্বন। শুধু মানুষ নয়, প্রাণীজগতেও চুম্বনের নানা রূপ দেখা যায়। কিন্তু মানব সভ্যতায় এর ব্যবহার কতটা গভীর, তা বলা যায় না।
প্রাচীন গ্রিসে শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এক অংশ ছিল ঠোঁট, হাত ও পদ চুম্বন। রোম সাম্রাজ্যে সম্রাটের হাত চুম্বন ছিল অভিষিক্তদের জন্য এক বিরাট সম্মান। ইসাক ডি’ইসরায়েলি লিখেছেন, অনেকেই এই সৌভাগ্যের জন্য নিজেদেরকে ভাগ্যবান মনে করতেন। হিন্দু ধর্মগ্রন্থেও চুম্বনের উল্লেখ রয়েছে। মুসলমানরা হজ্জ পালনকালে হাজরে আসওয়াদে চুম্বন করে থাকেন। বাৎস্যায়নের কামসূত্রে চুম্বনের নানা রূপের বর্ণনা আছে।
আধুনিক বিশ্বে চুম্বন প্রেম ও স্নেহের প্রকাশ। একটি স্পর্শ, এক নীরব বাক্য, যেখানে আছে অসংখ্য অনুভূতির প্রতিফলন। তবে সব সংস্কৃতিতে চুম্বন একইভাবে দেখা হয় না। অনেক সংস্কৃতির মধ্যে এটি ব্যক্তিগত এবং অন্তরঙ্গ কাজ। আরো কিছু সংস্কৃতির মধ্যে এটা প্রকাশ্যে অনুমোদিত নয়।
চুম্বন কেবলমাত্র একটা শারীরিক কাজ নয়। এটি মানুষের আবেগ, স্নেহ ও অনুভূতির প্রতিফলন। এটি বন্ধুত্ব, প্রেম, এবং পারিবারিক বন্ধনের প্রকাশক। তবে, এর অপব্যবহার হতে পারে, যা সামাজিক ক্ষতি সৃষ্টি করতে পারে।
সংস্কৃত ‘চুম্বন’ থেকে উৎপন্ন ‘চুমু’, ‘চুমা’, ‘চুমো’ বাংলায় প্রচলিত। চুম্বনের ইতিহাস প্রাচীন এবং বহুমুখী। এটি শুধু আবেগের প্রকাশ নয়, এটি মানব সভ্যতার এক অংশ।