চার্জশিট কি?
একটি ফৌজদারী মামলা তদন্ত শেষে থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা যে রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেন তাকে চার্জশিট বলে। এই রিপোর্টে মামলার তদন্তের বিস্তারিত, অভিযুক্তদের তথ্য, অপরাধের প্রমাণ, সাক্ষীদের বক্তব্য এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য থাকে। ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ১৭৩ এবং চতুর্দশ অধ্যায় অনুযায়ী নির্ধারিত ফরমে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
চার্জশিটের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো:
- চার্জশিটে অভিযুক্তদের সম্পূর্ণ তথ্য, অপরাধের বিস্তারিত এবং সমর্থনকারী প্রমাণ সমেত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণ থাকে।
- যদি অভিযুক্ত পলাতক থাকে, তাহলে চার্জশিটের সাথে পলাতক ব্যক্তির সম্পত্তির তালিকাও দাখিল করতে হয়।
- চুরি যাওয়া মালামালের তালিকা, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত সম্পত্তির তালিকা, দণ্ড সম্পর্কিত রিপোর্ট, জামিন সংক্রান্ত তথ্য, মুচলেকা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মানচিত্রও চার্জশিটের সাথে জুড়ে থাকে।
- পুলিশ কর্মকর্তা চার্জশিটের পিঠে সার্টিফিকেট দিয়ে জানান যে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে কোন দণ্ডাদেশ হয়েছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখেছেন।
- অভিযুক্ত পলাতক হলে, তদন্তকারী কর্মকর্তা পলাতক ব্যক্তির সম্পত্তির তালিকাও চার্জশিটের সাথে দাখিল করেন।
- রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসার আগে ই চার্জশিট দাখিল করতে হয়।
- চার্জশিটে অভিযুক্তের পূর্ব পরিচয় (চোর, ডাকাত, বেশ্যা ইত্যাদি) উল্লেখ করতে হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা যদি চার্জশিট দাখিলের পর আরও তদন্তের প্রয়োজন বোধ করেন, তাহলে তিনি সম্পূরক চার্জশিট (Supplementary Charge Sheet) দাখিল করতে পারেন। এটিতে আরও অভিযুক্ত যুক্ত করা হতে পারে।
আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে তার ভিত্তিতে বিচার কার্যক্রম শুরু করে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।