চন্দ্রঘোনা: কর্ণফুলীর তীরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক শহর
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত চন্দ্রঘোনা শহরটি চট্টগ্রাম শহর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে কাপ্তাই উপজেলা এবং রাঙ্গুনিয়ার মধ্যবর্তী কাপ্তাই সড়কে অবস্থিত। বহদ্দারহাট বাস স্টেশন থেকে এর দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। এটি কেবলমাত্র একটি শহর নয়, বরং ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সমন্বয়ে গড়ে উঠা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
চন্দ্রঘোনার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। এখানে প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দিরের অস্তিত্ব ইতিহাসের পাতায় নতুন দিক উন্মোচন করে। চাকমা এবং মারমা জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব নেলসন বারোয়ের জন্মস্থান হিসেবেও চন্দ্রঘোনা পরিচিত।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব:
দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ কাগজ কল, কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেড, চন্দ্রঘোনায় কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত। পূর্ব পাকিস্তানে কারখানা আইনের আওতায় নিবন্ধিত প্রথম কাগজ উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান ছিল এটি। প্রতিষ্ঠার সময় এটি ছিল এশিয়ার বৃহত্তম কাগজ কল, যেখানে ৩,০০০ এরও বেশি শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও, শহরে একটি কৃত্রিম রেশম কারখানা রয়েছে। চাষাবাদ ও কৃষিকাজও এখানকার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গুমাই বিল বাংলাদেশী ফসলের একটি বৃহৎ ক্ষেত্র।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:
চন্দ্রঘোনার ভৌগোলিক অবস্থান কাপ্তাই উপজেলা ও রাঙ্গুনিয়ার মধ্যবর্তী। এখানকার জনসংখ্যা সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক:
চন্দ্রঘোনার সংস্কৃতি চাকমা ও মারমা জনগোষ্ঠীর সাথে জড়িত। এখানকার ঐতিহ্যবাহী জীবনযাত্রা, ঐতিহ্যবাহী পোশাক, খাবার, তথা সংস্কৃতি একটি আকর্ষণীয় দিক। খ্রিস্টান হাসপাতালের অস্তিত্বও এখানকার সামাজিক চিত্রের একটি অংশ।
উপসংহার:
চন্দ্রঘোনা শুধুমাত্র একটি শহর নয়, এটি ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। এর অতীত এবং বর্তমানের সমন্বয় একে অনন্য করে তুলেছে।