চট্টগ্রাম কলেজ: বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
চট্টগ্রাম কলেজ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরের একটি ঐতিহ্যবাহী ও স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৮৩৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা স্কুল হিসেবে যাত্রা শুরু করে, ১৮৬৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক কলেজে উন্নীত হয়। ঢাকা কলেজের পর এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় কলেজ। চকবাজার এলাকার কলেজ রোডে অবস্থিত এই কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত।
প্রাথমিকভাবে আইন শিক্ষা প্রদান করা হলেও ১৯০৯ সালে বিজ্ঞান বিভাগ চালু হয় এবং আইন শিক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। ১৯১০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণীর ডিগ্রি কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। গণিত, রসায়ন ও পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতক (সম্মান) কোর্স শুরু হয়। পরবর্তীতে আরও বিষয় যুক্ত হয়। ১৯২৪ সালে শামসুল ওলামা কামালুদ্দিন আহমদ প্রথম মুসলিম অধ্যক্ষ হন এবং কলেজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ.কে. ফজলুল হক মুসলিম হোস্টেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯২৬ সালে প্রথম ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৫৫ সালে স্নাতক শ্রেণীর বিষয়সমূহ প্রত্যাহার করা হয়, কিন্তু ১৯৬০ সাল থেকে পুনরায় চালু হয়। ১৯৬২ সালে প্রাণিবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা এবং পরিসংখ্যান বিষয় যুক্ত হয়। পাকিস্তান আমলে অবকাঠামো উন্নয়নের ব্যাপক কাজ সম্পন্ন হয়।
বর্তমানে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক, এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান করা হয়। চট্টগ্রাম কলেজের ইংরেজি বিভাগকে ‘রাজকীয় বিভাগ’ বলা হয়। বিখ্যাত পণ্ডিত সুবোধ চন্দ্র সেনগুপ্ত ১৯৩৩ সালে এখানে যোগদান করেন। কলেজে একটি ঐতিহাসিক প্যারেড গ্রাউন্ড রয়েছে। বর্তমানে কলেজে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ।
চট্টগ্রাম কলেজ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে এবং ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বহন করে।