গল্লামারী

আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৯ পিএম

খুলনার গল্লামারী: মুক্তিযুদ্ধের এক অন্ধকার অধ্যায়

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালি জাতির ইতিহাসে স্মরণীয় এক যুদ্ধ। এই যুদ্ধে অসংখ্য বীর শহীদ তাদের প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন। কিন্তু স্বাধীনতার লড়াইয়ে শুধুমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রেই নয়, বিভিন্ন অমানবিক ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে বাঙালিদের। খুলনার গল্লামারী এই অমানবিক ঘটনারই এক বেদনাদায়ক সাক্ষী।

গল্লামারী, খুলনা শহরের কেন্দ্র থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে গল্লামারী খালের তীরে অবস্থিত একটি স্থান। ১৯৭১ সালে, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রেডিও স্টেশন (গল্লামারী রেডিও সেন্টার) এই অঞ্চলে অবস্থিত ছিল। এই রেডিও স্টেশনটিই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে এক বর্বর নির্যাতন ও গণহত্যার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিকামী মানুষ, এবং নিরীহ সাধারণ জনগণকে এখানে ধরা হতো, নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করা হত এবং গল্লামারী নদীতে ফেলে দেয়া হতো।

খুলনা শহর মুক্ত হওয়ার পর, গল্লামারী খাল ও এর আশেপাশের এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় পাঁচ ট্রাক ভর্তি মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড়। এ ঘটনা থেকে অনুমান করা হয় গল্লামারীতে আনুমানিক ১৫,০০০ মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। এটি খুলনা অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এই বধ্যভূমি অবস্থিত।

গল্লামারীতে গণহত্যার স্মৃতি ধরে রাখার জন্য একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। তবে এই স্মৃতিস্তম্ভের উন্নয়ন ও সংরক্ষণের কাজ এখনও অসম্পূর্ণ। এই বর্বর ঘটনার স্মৃতি বহন করে গল্লামারী আজও দাঁড়িয়ে আছে, একটি বেদনাদায়ক সাক্ষী হিসাবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • খুলনা শহরের দুই কিলোমিটার দূরে গল্লামারী খালের তীরে অবস্থিত।
  • ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা কেন্দ্র ছিল।
  • আনুমানিক ১৫,০০০ মানুষ হত্যার শিকার হয়েছিল এখানে।
  • খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থিত।
  • এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হলেও উন্নয়ন ও সংরক্ষণের কাজ অসম্পূর্ণ।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।