খোয়াই নদী ও তার রক্ষাকারীরা: একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন
হবিগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত পুরাতন খোয়াই নদী বর্তমানে ভরাট ও দখলের কবলে পড়ে চরম দুর্ভোগের মুখে। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা ও কৃত্রিম বন্যায় পুরো শহর জলে ডুবে যায়। এই দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধানে ‘খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার’ নামক একটি গোষ্ঠী কাজ করে যাচ্ছে। তাদের সাথে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখাও এক সঙ্গে কাজ করছে।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে, বাপা হবিগঞ্জ শাখার সভাপতি অধ্যাপক মো: ইকরামুল ওয়াদুদ এর নেতৃত্বে খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার ও বাপা পুরাতন খোয়াই নদীর নিউ মুসলিম কোয়াটার এলাকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন করে। এই দলের সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল এই নদীর দীর্ঘদিনের দখল, দূষণ এবং সংরক্ষণের চেষ্টা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
তোফাজ্জল সোহেল উল্লেখ করেন যে, প্রায় দুই দশক ধরে পরিবেশবাদী সংগঠন ও নাগরিক সমাজ নদীটি দখলমুক্ত করার জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসছে। ২০১৯ সালে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন মাছুলিয়া থেকে শায়েস্তানগর পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করেছিল, কিন্তু তৎকালীন জেলা প্রশাসকের বদলির পর এই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং দখলকৃত এলাকা আবার দখলে চলে যায়।
তিনি পুরাতন খোয়াই নদীকে শহরের যানজট কমাতে, অর্থনৈতিক গতিশীলতা বৃদ্ধি করতে এবং নান্দনিক সৌন্দর্য বাড়াতে নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে জড়িত করার প্রস্তাব দেন। অধ্যাপক মো: ইকরামুল ওয়াদুদ নদীর সঠিক সীমানা নির্ধারণ করে স্থায়ী সীমানা পিলার স্থাপনের দাবি জানান এবং ১৯৭৬-৭৯ সালে ৫ কিলোমিটার লুপকাটিং-এর মাধ্যমে নদীটিকে শহরের বাইরে সরিয়ে নেওয়ার জন্য নেওয়া পদক্ষেপের উল্লেখ করেন, যা অরক্ষিত থাকায় বর্তমান দুর্দশার কারণ হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার এবং বাপা হবিগঞ্জ শাখার এই উদ্যোগ পুরাতন খোয়াই নদী সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে সম্পূর্ণ সমাধানের জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং জনসাধারণের সক্রিয় সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি।