খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শিক্ষার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা মহানগরীর গোলামারীতে অবস্থিত। ১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারী গেজেটে এর প্রতিষ্ঠার সরকারি সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হলেও আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর। মাত্র ৪টি বিষয়ের ৮০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে যা আজ ৮টি অনুষদের অধীনে ২৯টি বিভাগ এবং একটি ইনস্টিটিউটে পরিণত হয়েছে। প্রায় ৭ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী নিয়ে এটি ছাত্র রাজনীতিমুক্ত একটি অনন্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত।
খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে, ময়ূর নদীর তীরে অবস্থিত ১০৫.৭৫ একরের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ। ১৯৭৪ সালে ড. কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনে খুলনা বিভাগে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। এরপর ১৯৭৯ সালে সরকারের ক্যাবিনেটে খুলনায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি গঠন, প্রস্তাব পেশ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর ১৯৮৭ সালে গেজেটে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৮৯ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৯০ সালে সংসদে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। প্রফেসর ড. গোলাম রহমান ছিলেন এর প্রথম উপাচার্য। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর একাডেমিক কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগের পাশাপাশি একটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, মসজিদ, মন্দির, ছাত্রাবাস এবং আধুনিক গবেষণাগার রয়েছে। এটি শিক্ষা, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম এর শান্তিপূর্ণ শিক্ষাপরিবেশ এবং ছাত্র রাজনীতি মুক্ত পরিবেশের জন্যও বিশেষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য হলো যুগোপযোগী ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা প্রদান, প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা, মৌলিক ও ব্যবহারিক গবেষণা এবং দক্ষ জনশক্তি গঠন।