সংগীত কিংবদন্তি কুইন্সি জোনস: এক অমিত প্রতিভার বিদায়
বিশ্বসঙ্গীতের অমিত সম্পদ কুইন্সি জোন্স ৯১ বছর বয়সে ইহলীলা সম্বরণ করেছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের নিজ বাসভবনে রবিবার রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার মুখপাত্র আর্নল্ড রবিনসন।
জোন্স শুধু একজন প্রযোজক ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন সুরকার, ব্যবস্থাপক, ট্রাম্পেটবাদক, এবং বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। মাইকেল জ্যাকসনের ‘থ্রিলার’ অ্যালবাম প্রযোজনার মাধ্যমে তিনি বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন। এই অ্যালবামটি সর্বকালের সবচেয়ে বেশি বিক্রিত অ্যালবামের মধ্যে একটি। তার সঙ্গীত ক্যারিয়ার শুরু হয় ৭৮ আরপিএম ভিনাইলে রেকর্ড বাজানোর সময়। তিনি ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা, রে চার্লস, এলা ফিটজারেল্ড, লিওনেল হ্যাম্পটন, মাইলস ডেভিস, এবং কাউন্ট বেসি-সহ অসংখ্য খ্যাতনামা শিল্পীর সাথে কাজ করেছেন। ‘রুটস’ এবং ‘ইন দ্য হিট অফ দ্য নাইট’-এর মতো চলচ্চিত্রের সাউন্ডট্র্যাক তৈরি ছিলো তার অন্যতম অবদান।
তিনি ১৯৮৫ সালে আফ্রিকার দুর্ভিক্ষের ত্রাণের জন্য ‘উই আর দ্যা ওয়ার্ল্ড’ নামক একটি দাতব্য রেকর্ডের তদারকি করেছিলেন। এই রেকর্ডে অংশ নিয়েছিলেন মাইকেল জ্যাকসন, লিওনেল রিচি, ব্রুস স্প্রিংস্টিন, টিনা টার্নার সহ অসংখ্য তারকা। প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রথম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজনও তার নামে লেখা। ‘দ্য কালার পার্পল’ এবং ‘দ্য ফ্রেশ প্রিন্স অফ বেল-এয়ার’-এর মতো চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন সিরিজে তার স্কোর লেখার কাজও উল্লেখযোগ্য।
জোন্সের বহুমুখী প্রতিভা এবং কল্পনা মাইকেল জ্যাকসনকে শিশু তারকা থেকে ‘কিং অফ পপ’ এ রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে। ‘থ্রিলার’ অ্যালবামে এডি ভ্যান হ্যালেন এবং ভিনসেন্ট প্রাইসের মতো শিল্পীদের নিয়ে আসাও ছিল তার অসাধারণ দিক। ৭৫ বছরের কর্মজীবনে তিনি ২৮টি গ্র্যামি পুরস্কার অর্জন করেছেন এবং টাইম ম্যাগাজিনের বিংশ শতাব্দীর প্রভাবশালী জ্যাজ শিল্পীদের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। তার 2001 সালে প্রকাশিত আত্মজীবনী “কিউ” তার বহুমুখী ক্যারিয়ারের ইতিহাস বহন করে।
কুইন্সি জোন্স কেবল একজন সংগীতশিল্পীই ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন একজন আইকন, যিনি আমেরিকান সংস্কৃতিতে অনন্য স্থান করে নিয়েছেন। তার অবদান স্মরণীয় থেকে যাবে যুগ যুগ ধরে।