কা’ব ইবন মালিক (রাঃ) ছিলেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর একজন বিশিষ্ট সাহাবী। তিনি ছিলেন একজন কবি, যোদ্ধা এবং হাদীস বর্ণনাকারী। তাবুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করার কারণে তিনি রাসূলুল্লাহর (সাঃ) কাছে অসন্তুষ্ট হলেও পরবর্তীতে আল্লাহর কাছে তাওবা করে তাঁর ক্ষমা লাভ করেন।
- *জন্ম ও পরিচয়:**
কা’ব ইবন মালিক (রাঃ) ৫৯৮ খ্রীষ্টাব্দে ইয়াসরিব (মদীনা) তে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বনু সালিমা গোত্রের সন্তান ছিলেন। তাঁর পিতার নাম মালিক ইবন আবী কাব আমর এবং মাতার নাম লায়লা বিনতু যায়িদ। তিনি পিতামাতার একমাত্র সন্তান ছিলেন। তাঁর অনেকগুলো কুনিয়াত বা ডাকনাম ছিল, যেমন: আবু ‘আবদুল্লাহ, আবু আবদির রহমান, আবু মুহাম্মাদ ও আবু বাশীর।
- *ইসলাম গ্রহণ ও আকাবার বাইয়াত:**
পঁচিশ বছর বয়সে, তিনি বাই’য়াতে আকাবায় শরীক হন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন। আকাবার শেষ বাইয়াতে তাঁর অংশগ্রহণ ছিল। বাইয়াতে আকাবার ঘটনার বর্ণনা তিনি বিভিন্ন প্রাচীন গ্রন্থে দিয়েছেন, যা সীরাতু ইবন হিশাম গ্রন্থেও উল্লেখ আছে।
- *যুদ্ধে অংশগ্রহণ:**
বদর যুদ্ধ ব্যতীত অন্যান্য সকল যুদ্ধে কা’ব (রাঃ) রাসূলুল্লাহর (সাঃ) সাথে অংশগ্রহণ করেন। উহুদ যুদ্ধে তাঁর দেহে এগারোটির বেশি স্থানে আঘাত লেগেছিল। উহুদে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে শাহাদাত বরণ করার গুজব ছড়িয়ে পড়লে কা’ব (রাঃ)ই প্রথম তাঁকে জীবিত অবস্থায় দেখতে পান এবং তা সকলকে জানিয়ে দেন।
- *তাবুক যুদ্ধে অনুপস্থিতি ও তাওবা:**
তাবুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করার জন্য তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি রাসূলুল্লাহকে (সাঃ) সত্য কথা বলেন এবং আল্লাহর কাছে তাওবা করেন। পরবর্তীতে তাদের তাওবা কবুল হওয়ার ঘোষণা সূরা তাওবার ১১৭ নং আয়াতে এসেছে।
- *কবিতা:**
কা’ব (রাঃ) ছিলেন একজন প্রতিভাবান কবি। তিনি তাঁর কবিতার মাধ্যমে ইসলামের প্রচার ও বিপক্ষদের প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি যুদ্ধ, শহীদদের স্মরণে ও ইসলামের নানা ঘটনাকে তাঁর কবিতায় ধারণ করেন।
- *হাদীস:**
কা’ব (রাঃ) থেকে মোট আশিটির বেশী হাদীস বর্ণিত রয়েছে।
- *ইন্তেকাল:**
কা’ব ইবন মালিক (রাঃ) হিজরী ৫০ থেকে ৫৫ সনের মধ্যে (৬৭০-৬৭৩ খ্রীষ্টাব্দ) মারা যান।