কাজী আবুল কালাম আজাদ

আপডেট: ৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২:১৩ এএম

মৌলানা আবুল কালাম আজাদ: ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও শিক্ষার পুরোধা

মৌলানা আবুল কালাম আজাদ (১১ নভেম্বর ১৮৮৮ - ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৮) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের একজন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী, পণ্ডিত, লেখক, সাংবাদিক এবং স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী। তিনি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের একজন প্রবক্তা ছিলেন এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের তীব্র বিরোধী ছিলেন। তার জন্মদিন ১১ নভেম্বর জাতীয় শিক্ষা দিবস হিসেবে পালিত হয়।

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা:

আজাদের জন্ম হয় সৌদি আরবের মক্কায় (তখন উসমানীয় সাম্রাজ্যের অংশ)। তার আসল নাম ছিল সৈয়দ গুলাম মুহিউদ্দিন আহমেদ বিন খায়েরুদ্দিন আল হুসায়নি। ১৮৯০ সালে তার পরিবার কলকাতায় চলে আসে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না পেলেও, বাড়িতে পড়াশোনা করে তিনি আরবি, ফারসি, উর্দু, হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। তিনি দর্শন, গণিত এবং ইতিহাসেও গভীর জ্ঞান অর্জন করেন।

সাংবাদিকতা ও রাজনৈতিক জীবন:

তরুণ বয়সে আজাদ সাংবাদিকতা শুরু করেন এবং ব্রিটিশ শাসনের সমালোচনা করে ‘আল-হিলাল’ এবং ‘আল-বালাগ’ নামে দুটি উর্দু পত্রিকা প্রকাশ করেন। ব্রিটিশ সরকার উভয় পত্রিকাই নিষিদ্ধ করে এবং তাকে কলকাতা থেকে বহিষ্কার করে। তিনি খিলাফত আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলনেও যোগ দেন। ১৯১৯ সালের রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন।

১৯২৩ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন, যা কংগ্রেসের সর্বকনিষ্ঠ সভাপতি হওয়ার রেকর্ড। ১৯৩১ সালে ধারাসন সত্যাগ্রহে অংশগ্রহণ করেন। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় (১৯৪০-১৯৪৫) তিনি পাঁচ বছর কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং তিন বছর কারাভোগ করেন।

স্বাধীন ভারত ও শিক্ষা:

স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তিনি বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা এবং উচ্চশিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’ (আইআইটি) এবং ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন’ (ইউজিসি) প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

মরণোত্তর সম্মান:

১৯৯২ সালে তাকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্নে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়।

মূল তথ্যাবলী:

  • মক্কায় জন্মগ্রহণ
  • স্বাধীনতা সংগ্রামী
  • হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের প্রবক্তা
  • ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী
  • আইআইটি ও ইউজিসি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা
  • ভারতরত্ন প্রাপ্তি

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।