মধ্য এশিয়ার বিশাল ভূখণ্ডে অবস্থিত কাজাখস্তান বিশ্বের নবম বৃহত্তম দেশ এবং সর্ববৃহৎ স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। এর উত্তরে রাশিয়া, পূর্বে চীন, দক্ষিণে কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান এবং পশ্চিমে ক্যাস্পিয়ান সাগর। কাজাখ ভাষা দেশটির সরকারি ভাষা। কাজাখরা এখানকার প্রধান জনগোষ্ঠী।
- *ঐতিহাসিক পটভূমি:** ১৮৭০-১৮৭৬ সালের মধ্যে রাশিয়া কাজাখস্তান দখল করে। ১৯২২ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ১৯৯১ সালে কাজাখস্তান স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশটিতে রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা বিদ্যমান। ১৯৯৫ সালে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা হয়, যাতে রাষ্ট্রপতিকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেওয়া হয়।
- *ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক সম্পদ:** কাজাখস্তানের আয়তন প্রায় ২,৭০০,০০০ বর্গকিলোমিটার। এখানে ইউরেনিয়াম, ক্রোমিয়াম, সীসা, দস্তা, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, কয়লা, লোহা, সোনা এবং তেল-গ্যাসের বিপুল মজুদ রয়েছে। এছাড়াও এটি হীরার রফতানিকারী।
- *অর্থনীতি:** কাজাখস্তানের অর্থনীতি মূলত তেল ও গ্যাস শিল্পের উপর নির্ভরশীল। তবে, দেশটি উন্নত প্রযুক্তি খাতেও বিনিয়োগ করছে। কাজাখস্তানই ছিল প্রথম প্রাক্তন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র যে তার সমস্ত ঋণ আন্তর্জাতিক বিশ্বকে পরিশোধ করেছিলো।
- *জনসংখ্যা ও সংস্কৃতি:** কাজাখস্তানের জনসংখ্যার ৭০% মুসলমান। বাকি ৩০% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। কাজাখরা প্রধান জনগোষ্ঠী, এরপর রয়েছে রুশরা। দেশটিতে কাজাখ ও রুশ ছাড়াও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে।
- *গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা:** ১৯৮৬ সালের জেলটোস্কান দাঙ্গা, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভ, সেমিপালাতিনস্কের পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা কেন্দ্র।
- *প্রশাসনিক কেন্দ্র:** কাজাখস্তানের রাজধানী নুর-সুলতান (পূর্বে আস্তানা)। প্রাক্তন রাজধানী আলমাটি।
কাজাখস্তান বিশ্বের দুটি মাত্র ল্যান্ডলকড দেশগুলির মধ্যে একটি যার অঞ্চল দুটি মহাদেশে বিস্তৃত (অন্যটি আজারবাইজান)। দেশটির ভূপ্রকৃতি বিচিত্র, এখানে মরুভূমি, স্টেপ্প এবং পাহাড় দেখা যায়।