কলাপাড়া

কলাপাড়া: পটুয়াখালীর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত পটুয়াখালী জেলার একটি প্রধান উপজেলা হল কলাপাড়া। বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত এই উপজেলাটি আন্ধারমানিক নদীর তীরে অবস্থিত এবং পটুয়াখালী জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। ২০১০ সালে কলাপাড়া পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর থেকে শহরটির উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:

কলাপাড়া উপজেলার আয়তন ৪৯১.৮৯ বর্গ কিলোমিটার। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ২৩৭,৮৩১ জন। কলাপাড়া শহরের জনসংখ্যা ২৬,১৭৭ জন (পুরুষ ১৩,৩৪২ এবং নারী ১২,৮৩৫)। শহরটির অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২১°৫৯′০৬″ উত্তর ৯০°১৩′৫৩″ পূর্ব।

অর্থনীতি ও কৃষিকাজ:

কলাপাড়ার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, ডাল, আলু, তরমুজ প্রধান কৃষি ফসল। কলা, পেঁপে, নারিকেল, পেয়ারা, বাদাম, কূল ইত্যাদি ফল-ফলাদি উৎপাদন হয়। এছাড়াও, মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে। শুঁটকি পল্লী কলাপাড়ার অন্যতম আকর্ষণ।

ঐতিহাসিক তথ্য:

১৯২৮ সালে কলাপাড়া থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় কলাপাড়ার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা অপারেশন পরিচালনা করেছিলেন। কলাপাড়া কেরানীপাড়ার প্রাচীন বৌদ্ধবিহারে গৌতম বুদ্ধের ধ্যানমগ্ন মূর্তি (এশিয়ার সর্ববৃহৎ বুদ্ধমূর্তি) রয়েছে, যা ঐতিহাসিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:

শিক্ষার হার ৬৫.৫%। কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, এবং পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র রয়েছে।

পর্যটন:

কলাপাড়ার দক্ষিণে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা অবস্থিত। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য কুয়াকাটা বিখ্যাত। কুয়াকাটা বৌদ্ধবিহার, শুঁটকি পল্লী, সিফিশ মিউজিয়াম ইত্যাদি পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

উপসংহার:

কলাপাড়া একটি উন্নয়নশীল উপজেলা যার অর্থনীতি কৃষি ও মৎস্যের উপর নির্ভরশীল। ঐতিহাসিক ও পর্যটনগত গুরুত্বের কারণে এটি বাংলাদেশের মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • কলাপাড়া পটুয়াখালী জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা
  • আন্ধারমানিক নদীর তীরে অবস্থিত
  • কৃষি ও মৎস্যচাষ প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড
  • কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র কলাপাড়ার অধীনে
  • ঐতিহাসিক বৌদ্ধবিহার ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিদ্যমান