কনৌজ: ঐতিহাসিক গন্ধের নগরী
ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের কনৌজ জেলায় অবস্থিত কনৌজ শহরটি ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক গুরুত্বের জন্য বিখ্যাত। প্রাচীন কালে কান্যকুব্জ নামে পরিচিত এই শহরটি বহু রাজবংশের রাজধানী হিসেবে কাজ করেছে। সংস্কৃত সাহিত্যে ‘কুব্জা রমণীগণের নগরী’ হিসেবে এর উল্লেখ পাওয়া যায়। মিহির ভোজের রাজত্বকালে এটি ‘মহোদয়’ নামেও পরিচিত ছিল। আজ কনৌজ ‘সুগন্ধি’র জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত; তামাক, সুগন্ধি ও গোলাপ জলের বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এখানকার কনৌজি উপভাষা হিন্দির একটি স্বতন্ত্র রূপ।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
কনৌজের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাচীন কালে এটি হর্ষবর্ধনের সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। কথিত আছে, কান্যকুব্জ ব্রাহ্মণদের আদি নিবাস ছিল কনৌজ। ৮ম থেকে ১০ম শতাব্দীর মধ্যে গুর্জর-প্রতিহার, পাল ও রাষ্ট্রকূট রাজবংশের মধ্যে ক্ষমতা সংগ্রামের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ছিল কনৌজ। এই ত্রিপাক্ষিক সংঘর্ষের ইতিহাস কনৌজকে কেন্দ্র করে ঘোরতর সংঘাতের কথা বলে। শেষ পর্যন্ত গুর্জর-প্রতিহাররা শহরটি নিজেদের অধিকারে রাখতে সক্ষম হয়। ১০১৮ সালে গজনির মহম্মদ কনৌজ দখল করেন। ১০৯০ সালে গহদবল রাজবংশের প্রতিষ্ঠা হয় কনৌজে। গোবিন্দচন্দ্রের আমলে কনৌজ অতুলনীয় গৌরব অর্জন করে। ১১৯৩ সালে মহম্মদ ঘোরি জয়চন্দ্রকে পরাজিত করে কনৌজ দখল করেন। ইলতুতমিসের বিজয়ের সাথে সাথে ‘কনৌজ সাম্রাজ্যের গৌরব’ এর অবসান ঘটে।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:
কনৌজ ২৭°০৪′ উত্তর ৭৯°৫৫′ পূর্ব অক্ষাংশে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা ১৩৯ মিটার (৪৫৬ ফুট)। ২০০১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী, কনৌজের জনসংখ্যা ছিল ৭১,৫৩০ জন। শহরের ৫৩% পুরুষ ও ৪৭% মহিলা। গড় সাক্ষরতার হার ৫৮%।
অর্থনীতি:
কনৌজ ‘ভারতের সুগন্ধি রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত। শহরে ২০০-রও বেশি সুগন্ধি তৈরির কারখানা রয়েছে। তামাক ও গোলাপ জলের বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবেও এর গুরুত্ব অপরিসীম।
পর্যটন:
কনৌজের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে এটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান। গৌরী শংকর মন্দির, অন্নপূর্ণা মন্দির, লাখ বাহোসি পাখিরালয় ইত্যাদি স্থান পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়।
আরও তথ্যের জন্য:
কনৌজ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার জন্য আমরা পরবর্তীতে আপডেট প্রদান করবো।