ওয়াজ

ওয়াজ মাহফিল বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 'ওয়াজ' শব্দটি আরবি থেকে এসেছে, যার অর্থ 'উপদেশ' বা 'পরামর্শ', আর 'মাহফিল' বোঝায় 'সমাবেশ'। এই মাহফিলে ইসলামি ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গ ধর্মীয় উপদেশ, কুরআনের ব্যাখ্যা, ইসলামী জীবনবোধ ও নৈতিকতা সম্পর্কে বক্তৃতা দেন।

ঐতিহাসিকভাবে, ১৯০৬ সালে ইব্রাহিম আলী তশনা সর্বপ্রথম সিলেটে ইসলামি জলসা (পরবর্তীতে ওয়াজ মাহফিল হিসেবে পরিচিত) আয়োজন করেন। তার এই উদ্যোগ দ্রুত আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে মসজিদ, মাদ্রাসা, ইসলামি সংগঠন এর আয়োজন করত। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনও এতে জড়িত হয়।

ওয়াজ মাহফিল সাধারণত খোলা জায়গায়, মাঠে, ধানক্ষেতে, বা গ্রামীণ এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়। শীতকালে বেশি ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা আলাদা বসার ব্যবস্থা থাকে। বক্তৃতা রাতের বেলা শুরু হয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে। জনপ্রিয় বক্তাদের মাহফিলে কয়েক লক্ষ মানুষ উপস্থিত থাকে।

আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী ওয়াজ মাহফিলের সবচেয়ে প্রভাবশালী বক্তাদের একজন ছিলেন। তিনি ১৯৮০-১৯৯০ এর দশকে ওয়াজ মাহফিলকে সামাজিক-রাজনৈতিক বক্তব্যের মাধ্যমে রূপান্তরিত করেন এবং এর মাধ্যমে ইসলামী রাজনীতির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

আধুনিক যুগে ইন্টারনেট ও ইউটিউবের মাধ্যমে ওয়াজ মাহফিলের ভিডিও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে, যা এর জনপ্রিয়তাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তবে, ওয়াজ মাহফিলের সাথে রাজনৈতিক ব্যবহার নিয়েও সমালোচনা রয়েছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯০৬ সালে ইব্রাহিম আলী তশনা প্রথম ইসলামি জলসা (ওয়াজ মাহফিল) আয়োজন করেন।
  • শীতকালে বেশিরভাগ ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
  • আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী একজন প্রভাবশালী ওয়াজ মাহফিল বক্তা ছিলেন।
  • ইউটিউব ও ইন্টারনেট ওয়াজ মাহফিলের জনপ্রিয়তাকে বৃদ্ধি করেছে।
  • ওয়াজ মাহফিলের রাজনৈতিক ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা রয়েছে।

গণমাধ্যমে - ওয়াজ

এই অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য হৃদয় মিয়া বাংলাদেশে এসেছিল।

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ মাহফিল পেকুয়ায় অনুষ্ঠিত হবে।