উত্তরপ্রদেশ: ভারতের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র
উত্তরপ্রদেশ, ভারতের সবচেয়ে জনবহুল ও ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলির মধ্যে একটি। 'যুক্তপ্রদেশ' নামে ১৯৩৭ সালের ১ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত এই রাজ্যের নাম ১৯৫০ সালে বদলে 'উত্তরপ্রদেশ' রাখা হয়। লখনউ রাজ্যের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। কানপুর, আগ্রা, বারাণসী, গাজিয়াবাদ প্রভৃতি শহর রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র। ২০০০ সালে উত্তরপ্রদেশের হিমালয় সংলগ্ন অংশ থেকে উত্তরাখণ্ড নামে একটি নতুন রাজ্য গঠিত হয়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
উত্তরপ্রদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে, এটি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় কালে বহু সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। মৌর্য, গুপ্ত, কুষাণ, রাজপুত, এবং মুঘল সাম্রাজ্যের উত্থান ও পতনের সাক্ষী এই রাজ্য। রামায়ণ ও মহাভারতের ঘটনাও এই রাজ্যের সাথে জড়িত। অযোধ্যা, মথুরা, কুরুক্ষেত্র, প্রয়াগরাজ (এলাহাবাদ) - এই সব স্থান হিন্দু ধর্ম ও ঐতিহাসের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ু:
গঙ্গা ও যমুনা নদীর দোয়াব অঞ্চলের এই রাজ্যের উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা এবং দক্ষিণে বিন্ধ্য পর্বতমালা অবস্থিত। রাজ্যের জলবায়ু আর্দ্র উপক্রান্তীয়। গ্রীষ্মকাল অত্যন্ত উষ্ণ এবং বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।
অর্থনীতি:
উত্তরপ্রদেশ ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি। কৃষি, বস্ত্রশিল্প, তথ্য প্রযুক্তি, এবং পর্যটন এই রাজ্যের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
জনসংখ্যা ও সাক্ষরতা:
উত্তরপ্রদেশ বিশ্বের বৃহত্তম প্রাদেশিক রাজনৈতিক বিভাগ। জনসংখ্যা ২০ কোটিরও বেশি। সাক্ষরতার হার জাতীয় গড়ের চেয়ে কিছুটা কম।
সমস্যা:
উচ্চ জনসংখ্যা, দারিদ্র্য, দুর্নীতি, এবং জাতিগত দাঙ্গা উত্তরপ্রদেশের বৃহৎ সমস্যা।
উল্লেখযোগ্য স্থান:
লখনউ, আগ্রা, বারাণসী, অযোধ্যা, মথুরা, এলাহাবাদ, কানপুর।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি:
মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহেরু, চন্দ্রশেখর আজাদ
সারসংক্ষেপ:
উত্তরপ্রদেশ ভারতের একটি ঐতিহাসিক, জনবহুল এবং অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। এর ঐতিহ্য, ভৌগোলিক অবস্থান, এবং জনসংখ্যার কারণে এটি ভারতের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে দারিদ্র্য, দুর্নীতি এবং অন্যান্য সমস্যা এ রাজ্যের উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।