ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ: একটি বিশ্লেষণ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (পূর্বনাম ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন) বাংলাদেশের একটি প্রভাবশালী ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল। ১৯৮৭ সালের ১৩ই মার্চ বিভিন্ন ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনের যৌথ প্রয়াসে ইসলামি শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন’ নামে আত্মপ্রকাশ করে। সৈয়দ ফজলুল করিম (চরমোনাই পীর) এর নেতৃত্বে এটি পরবর্তীতে একটি একক রাজনৈতিক দলে পরিণত হয় এবং ১৯৯১ সাল থেকে পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক দল হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৮ সালে ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’ নামে নিবন্ধিত হয় এবং ‘হাতপাখা’ প্রতীক লাভ করে। দলটির বর্তমান আমির সৈয়দ রেজাউল করিম, নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করিম এবং মহাসচিব ইউনুস আহমাদ।
দলটির উল্লেখযোগ্য নেতৃত্বের মধ্যে রয়েছেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আব্দুর রহিম, আজিজুল হক, আবদুল আহাদ মাদানী, খাজা সাঈদ শাহ এবং কোরবান আলী প্রমুখ। দেওবন্দ মুখী কওমি মাদ্রাসা ও উলামাদের পাশাপাশি সারাদেশে বিপুল সংখ্যক মুরিদ ও পীরের অনুসারী দলটির সমর্থন ভিত্তি গঠন করে।
দলটির কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দাওয়াহ, সংগঠন, জ্ঞান আহরণ ও প্রশিক্ষণ, জনগণের ঐক্য, মানবতার সেবা, সামাজিক ও শিক্ষার সংস্কার, অর্থনৈতিক মুক্তি, ইসলামী সংস্কৃতির বিকাশ, সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামী নীতির ভিত্তিতে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। ‘শুধু নেতা নয়, নীতির পরিবর্তন চাই’ দলটির মূল স্লোগান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। ১৯৯১ সালে ইসলামী ঐক্যজোটের অংশ হিসেবে, পরে এককভাবে এবং বিভিন্ন জোটের সাথে অংশগ্রহণ করে। তারা ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচন বর্জন করে এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও তারা উল্লেখযোগ্য ভোট লাভ করেছে।
এছাড়াও, রোহিঙ্গা সংকট, ব্লাসফেমি আইন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, ভারতের এনআরসি ও সিএএ আইন প্রভৃতি বিষয়ে তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। দলের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, যুব সংগঠন ইসলামী যুব আন্দোলন, শ্রমিক সংগঠন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ সহ আরও অনেক সহযোগী সংগঠন রয়েছে।