ইসকন মন্দির বা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৬ সালে শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত, ইসকন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এর অসংখ্য মন্দির ও কেন্দ্র বিদ্যমান। প্রতিটি ইসকন মন্দিরের গঠন, আকার ও ইতিহাস ভিন্ন ভিন্ন হলেও, সকলের মূল লক্ষ্য একই: ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্তি ও বৈদিক জ্ঞানের প্রসার।
বাংলাদেশের ইসকন মন্দির: বাংলাদেশে ইসকনের বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে। চট্টগ্রামের ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দির উল্লেখযোগ্য। রাজস্থানের মাকরানা মার্বেল ও আফ্রিকা এবং মায়ানমারের কাঠ দিয়ে নির্মিত এই মন্দিরটি এর স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত। মন্দিরের অভ্যন্তর সুন্দর শিল্পকর্ম ও নকশায় সজ্জিত। এছাড়াও ঢাকা, সিলেট, যশোর ও কুমিল্লায় ইসকনের মন্দির রয়েছে। এই মন্দিরগুলি ধর্মীয় অনুষ্ঠান, কীর্তন, ভজন ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচির আয়োজন করে থাকে।
ইসকনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড: ইসকন শুধুমাত্র মন্দির নির্মাণেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি বিভিন্ন মানব সেবামূলক কর্মকান্ডেও জড়িত। 'ফুড ফর লাইফ' নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ইসকন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খাদ্য সরবরাহ করে থাকে। শিক্ষা, আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ এবং অনাথ আশ্রমের মতো সামাজিক উদ্যোগেও ইসকনের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।
ইসকন ও সমালোচনা: ইসকনের ইতিহাসে কিছু সমালোচনার মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা রয়েছে। যৌন নির্যাতন, অর্থাত্মক অনিয়ম, ধর্মান্তরের মতো অভিযোগ উঠেছে। তবে, ইসকন এই অভিযোগগুলিকে প্রত্যাখ্যান করে এবং তাদের মানবিক কাজের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে।
উপসংহার: ইসকন মন্দিরগুলিকে কেবল ধর্মীয় স্থান হিসেবেই নয়, বরং আধ্যাত্মিক জ্ঞান, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং মানব সেবা কেন্দ্র হিসেবেও দেখা যেতে পারে। ইসকনের কার্যক্রম সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।