ইউএনও

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও): বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার প্রশাসনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হলেন বাংলাদেশের উপজেলা পর্যায়ের প্রশাসনের মেরুদণ্ড। উপজেলার মুখ্য কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে, ইউএনও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার) এর একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। এটি বিসিএসের ৬ষ্ঠ গ্রেডের একটি পদ এবং পদমর্যাদায় সিনিয়র সহকারী সচিবের সমতুল্য।

ইউএনও পদের উৎপত্তি উপজেলা গঠনের সাথে জড়িত। পূর্বে, প্রতিটি জেলার মহকুমায় মহকুমা প্রশাসক বা সাব-ডিভিশনাল অফিসার (এসডিও) কার্যকরী ছিলেন। তবে, ১৯৮২ সালে, তৎকালীন সামরিক শাসক রাষ্ট্রপতি জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আমলে স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা পুনর্গঠন) অধ্যাদেশের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পদ সৃষ্টি করা হয়। এরশাদ সরকার প্রশাসনিক পুনর্গঠন ও সংস্কার কমিটি গঠন করে, যার লক্ষ্য ছিল জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদ গঠন করা। এর অংশ হিসেবে, শহর এলাকার বাইরের প্রতিটি থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয় এবং প্রথমে থানা নির্বাহী অফিসারের পদ সৃষ্টি করা হয়, যা পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারে পরিবর্তিত হয়।

ইউএনও'র দায়িত্ব ও কাজের পরিধি ব্যাপক। তিনি উপজেলার সার্বিক উন্নয়ন, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ, আইন-শৃঙ্খলা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করেন। তিনি স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলার প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করেন। ইউএনও'র কাজের গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ তার মাধ্যমেই কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিমালা ও কর্মসূচী গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ইউএনও হলেন উপজেলার প্রশাসনিক প্রধান
  • বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সদস্য
  • ১৯৮২ সালে এরশাদ সরকারের আমলে পদ সৃষ্টি
  • উপজেলার সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
  • কেন্দ্রীয় সরকারের উপজেলা পর্যায়ের প্রতিনিধি