অসংক্রামক রোগ (Non-Communicable Diseases, NCDs) বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত। এই রোগসমূহ একজন ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়ায় না, বরং দীর্ঘস্থায়ী ও ধীরে ধীরে বিকাশে গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করে। হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী রোগ ইত্যাদি এর অন্তর্গত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মোট মৃত্যুর প্রায় 70% এর জন্য অসংক্রামক রোগ দায়ী। প্রতি বছর 41 মিলিয়ন মানুষ অসংক্রামক রোগে মারা যান, এর 77% নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে। ৩০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী ১৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ অকালে মারা যাচ্ছে, যার ৮৫% নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে।
এই রোগের প্রধান ঝুঁকি কারণগুলো হলো ধূমপান, অপর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ, অতিরিক্ত মদ্যপান এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্য। উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, রক্তে চিনির মাত্রা বৃদ্ধি এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধিও এর সাথে জড়িত। প্রতিরোধের জন্য সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়োচিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং রোগ নির্ণয়ও অপরিহার্য। অসংক্রামক রোগের চিকিৎসার খরচ বহন করার ক্ষমতা অনেক দেশের নেই, তাই প্রতিরোধই একমাত্র উপায়। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সচেতনতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যাবশ্যক। জাকির হোসেন হাওলাদার এর মতো গবেষকরা এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
সঠিক জীবনযাত্রার মাধ্যমে আমরা অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি কমাতে এবং সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপন করতে পারি। সরকার, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও জনসাধারণের সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে অসংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখা জরুরি।