সৈয়দ ফয়জুল করিম: একজন ইসলামি পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ
সৈয়দ ফয়জুল করিম (জন্ম: ১০ জানুয়ারি ১৯৭৩) একজন বাংলাদেশী ইসলামি পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ। তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার সমর্থকদের কাছে তিনি ‘শায়েখে চরমোনাই’ নামে পরিচিত। তিনি বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি ও বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের সহ-সভাপতি এবং বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্যও বটে। ছাত্রজীবনে তিনি ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন (১৯৯৩-৯৪)। ২০২০ সালে বাংলাদেশের ভাস্কর্য বিতর্কে তিনি ব্যাপকভাবে আলোচিত হন।
বরিশাল জেলার চরমোনাই গ্রামে ১৯৭৩ সালের ১০ জানুয়ারি ফয়জুল করিমের জন্ম। তার পিতার নাম সৈয়দ ফজলুল করিম এবং দাদার নাম সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক। তার ৭ ভাই ও ১ বোন রয়েছে। তার পরদাদা সৈয়দ আমজদ আলী ছিলেন সৈয়দ ওমর আলীর ছেলে। তার পূর্বপুরুষ (পরদাদার দাদা) সৈয়দ আলী আকবর বগদাদ শহর হতে বাংলায় হিজরত করে পশুরীকাঠি গ্রামে বসবাস শুরু করেন। আলী আকবরের ছোট ভাই, সৈয়দ আলী আসগর, কীর্তনখোলা নদীর পশ্চিমপাড়ে অবস্থিত লাকটিয়া গ্রামের সৈয়দ পরিবারের পূর্বপুরুষ।
ফয়জুল করিম চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া ইসলামিয়া থেকে শিক্ষাজীবনের সূচনা করেন এবং ১৯৯৫ সালে এর আলিয়া শাখা থেকে কামিল পাশ করেন। এর কওমি শাখায়ও তিনি ক্লাস করতেন। পরবর্তীতে বরিশালের সাগরদী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে ফিকহ ও হাদিসে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ায়ও কিছুদিন পড়াশোনা করেছেন।
শিক্ষাজীবন শেষে তিনি চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া ইসলামিয়ার আলিয়া শাখার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং দীর্ঘদিন আলিয়া ও কওমি উভয় শাখার সহকারী অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালের ২৫ নভেম্বর তার পিতার মৃত্যুর পর তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন।
২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তার বক্তব্য বিতর্কের জন্ম দেয়। ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর তিনি যাত্রাবাড়ীস্থ গেন্ডারিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন, যা জাতীয় বিতর্কের সূত্রপাত করে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দায়ের হয় এবং পিবিআই তদন্তভার গ্রহণ করে।