আবদুল্লাহ আল সেন্টু: অভিনয়ের পথে এক সংগ্রামী যাত্রা
আবদুল্লাহ আল সেন্টু, নামটি বর্তমানে বাংলাদেশের অভিনয় জগতে বেশ পরিচিত। কিন্তু এই পরিচিতি অর্জনের পথ কিন্তু মোটেই সহজ ছিল না। দারিদ্র্য, অবহেলা, এবং সমাজের নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে তিনি এসেছেন এতদূর। একজন দরজির ছেলে হিসেবে জীবনের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তিনি আজ একজন সফল অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
প্রারম্ভিক জীবন ও সংগ্রাম:
সেন্টুর জন্ম কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর থানার পূর্ব লালপুর গ্রামে। পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল ছিল। বাবার মৃত্যুর পর মা একা সেই দায়িত্ব বহন করেন। সেন্টু ৬ বছর বয়সে কিশোরগঞ্জ শহরে সরকারি শিশু পরিবারে লেখাপড়া করেন। শৈশবে নাট্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম পুরস্কার জিতে তাঁর অভিনয় জীবনের সূচনা হয়।
অভিনয় জীবনের উত্থান:
শিশু একাডেমিতে অভিনয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে পুরস্কার জেতার পর, সেন্টু চন্দ্রাবতী থিয়েটারে অভিনয় শুরু করেন। ‘আন্তর্জাতিক শিশু নাট্য উৎসব ২০০৯’-এ অংশগ্রহণ করে তিনি সবার নজর কাড়েন। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে ঢাকায় এসে কলেজের পাশাপাশি অভিনয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লড়াইয়ে নেমে পড়েন।
সফলতার পথ:
প্রথমদিকে অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হলেও ‘বাংকার বয়’, ‘শুক্লপক্ষ’, ‘কারাগার’ সহ একাধিক ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে সেন্টু জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ ওয়েব সিরিজের ‘জাদু’ চরিত্রে অভিনয় করে তিনি দর্শকদের মনে স্থান করে নেন। ‘বিলাই’, ‘টিকিট’ সহ আরও বেশ কয়েকটি ওয়েব সিরিজে অভিনয় করে তিনি তার অভিনয় দক্ষতা প্রমাণ করেছেন।
সম্মাননা ও পুরষ্কার:
২০২২ সালে চ্যানেল আই ডিজিটাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডে ‘বেস্ট রাইজিং স্টার’ অ্যাওয়ার্ড পেয়ে সেন্টু আবেগাপ্লুত হন।
উপসংহার:
সেন্টুর জীবন একটি প্রেরণার উৎস। দারিদ্র্য ও অবহেলার মধ্য দিয়ে সফলতার শিখরে পৌঁছানোর তাঁর কাহিনী আমাদের অনুপ্রাণিত করে। তাঁর অভিনয় জীবনের প্রতি আগ্রহ ও তার কাজের প্রতি নিষ্ঠা তাকে এতদূর নিয়ে এসেছে। আশা করি ভবিষ্যতে ও আমরা তার আরও অনেক উল্লেখযোগ্য কাজ দেখতে পাবো।