ডঃ শহিদুল আলম: একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী আলোকচিত্রশিল্পী, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী
ডঃ শহিদুল আলম (জন্ম: ১৯৫৫) বাংলাদেশের একজন অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। তিনি একজন বিশিষ্ট আলোকচিত্রশিল্পী, সাংবাদিক এবং সমাজকর্মী হিসেবে সুপরিচিত। তার জন্ম ঢাকায়। পিতার নাম কাজী আবুল মনসুর এবং মাতার নাম কাজী আনোয়ারা মনসুর। তিনি রসায়ন বিষয়ে লেখাপড়া করার পর লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জৈব রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি ‘দৃক ফটো গ্যালারি’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে ‘দৃক পিকচার লাইব্রেরি’ নামে পরিচিতি পায়। ১৯৯৮ সালে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার ফটোগ্রাফি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘পাঠশালা’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ‘ছবিমেলা’ নামক আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র চিত্রপ্রদর্শনীরও প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ডপ্রেস ফটো প্রতিযোগিতায় প্রথম এশীয় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি তিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির ‘ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এক্সপ্লোরার অ্যাট লার্জ’ হিসেবে নিযুক্ত হন।
২০১৮ সালের ৫ আগস্ট, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন নিয়ে আল জাজিরার সাক্ষাৎকারের পর তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। তথ্য প্রযুক্তি আইনে দায়ের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই ঘটনা ব্যাপক আন্তর্জাতিক নিন্দা ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। বহু দেশি-বিদেশী সংস্থা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তার মুক্তির দাবি জানান। অবশেষে, ১৫ নভেম্বর ২০১৮ তে হাইকোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করে।
ডঃ শহিদুল আলম অনেক পুরষ্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন, যার মধ্যে মাদার জোন্স পদক (১৯৯৩), আন্দ্রে ফ্রাঙ্ক ফাউন্ডেশন ও হাওয়ার্ড চ্যাপনিক পুরস্কার (১৯৯৮), শিল্পকলা পদক (২০১৪), লুসি ফাউন্ডেশন প্রদত্ত মানবতাবাদী পুরস্কার (২০১৮) এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার অফ ফটোগ্রাফির স্পেশাল প্রেজেন্টেশন অ্যাওয়ার্ড (২০১৯) উল্লেখযোগ্য। ২০১৮ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাকে বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচিত করে।